কালোজিরা খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা ও ৫টি অপকারিতা
পেইজ সূচিপত্রঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
- কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা।
- কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতাঃ জানুন সতর্কতা।
- কালোজিরার মধ্যে থাকা পুষ্টিউপাদান।
- কালোজিরা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা।
- মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম।
- কালোজিরা তেল খাওয়ার নিয়ম।
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা।
- রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়।
- আমাদের শেষ কথা। স্বাস্থ্য সচেতনতায় কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কালোজিরা বা নাইজেল সাধারণত মসলা হিসেবে খাওয়া হয়। কিন্তু এই মশলার এতোই পুষ্টিগুণ যে বলে শেষ করা যাবে না। কালোজিরা বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে একটি জনপ্রিয় মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালোজিরার রয়েছে ঝাঁঝালো স্বাদ ও সুগন্ধ। এছাড়াও এই মশলার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারি। কালোজিরাতে রয়েছে থাইমোকুইনোন যা আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম।
কালোজিরার অগণিত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু অপকারিতাও লক্ষ্য করা যায়। এর অপকারিতাগুলো আপনার অবশ্যই জানা উচিত। তানাহলে কালোজিরা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কালেজিরা নিয়ম করে খেলে আপনি অবশ্যই এর অপকারিতার চেয়ে উপকারিতাই বেশি পাবেন। আপনার জানার সুবিধার্থে আজকে আমরা কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় দিক নিয়ে আলোচনা করবো। আসুন তাহলে জেনে নিন কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত স্বাস্থ্যের জন্য এক অমূল্য উপহার। কালোজিরা বা নাইজেল হলো একটি অত্যন্ত উপকারি মশলা যা অনেক শতাব্দী যাবত আয়ুর্বেদিক ও অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালোজিরাতে রয়েছে অগণিত পুষ্টি উপাদান। তাই তো এটি মশলা সত্ত্বেও আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি। আপনি যেভাবেই কালোজিরা খান না কেন, সবভাবেই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারিতা বয়ে আনবে এই মশলাটি। আসুন তাহলে জেনে নিন কলেজের উপকারিতা গুলো কি কি-
- হজমের উন্নতিঃ কালোজিরা হজমকারী এনজাইমের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। যার আপনার পেটের সমস্যা যেমন- কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ব্যাথা, পেট ফোলা ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধিঃ কালোজিরাতে রয়েছে অ্যান্টঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরকে বিভিন্ন রোগবালাই থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ কালোজিরা আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত পরিমাণ মতো কালোজিরা খেলে হৃদরোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
- ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনাঃ আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী এখন তারা নিয়মিত পরিমাণ মতো কালোজিরা খান। কালোজিরা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণগুলো কমাতে পারে।
- প্রদাহ কমানোঃ কালোজিরায় রয়েছে প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য যা, আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরণের প্রদাহজনিত রোগের সমস্যা সমাধান করতে সহয়তা করে।
- ওজন কমানোঃ কালোজিরা আপনার শরীরে অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আপনার চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে যার ফলে আপনার ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এই যাদুকরী মশলাটি।
- চুল ও ত্বকের জন্য উপকারীঃ কালোজিরা চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে। এটি চুল পড়া বন্ধ করে, চুলের বৃদ্ধি করে, চুল ফাটা রোধ করে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। তাছাড়া ত্বকের জন্যও বেশ উপকারী এই কালোজিরা। এটি ত্বকের রং উজ্জ্বল করে, ব্রন দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ করে তোলে।
- মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধিঃ আপনি যদি নতুন মা হয়ে থাকেন তাহলে কালেজিরার ভর্তা খেলে মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে নবজাতক ভালোভাবে দুধ খেতে পারবে।
- অন্যান্য উপকারিতাঃ কালোজিরা ক্যানসার প্রতিরোধে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা যেটাই থাকুক না কেন, কালোজিরা খাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
কালোজিরা খাওয়ার অপকারিতাঃ জানুন সতর্কতা
- গর্ভাবস্থা ও দুধের দানঃ গর্ভবতী ও দুধের দানকারী মহিলাদের কালোজিরা খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খাওয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি মারাতে পারে।
- রক্ত পাতলা হওয়াঃ আপনি যদি ইতোমধ্যে রক্ত পাতলা করার ওষুধ সেবন করে থাকেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে কালোজিরা খাওয়ার আগে। কারণ কালোজিরা রক্ত পাতলা করার প্রবণতা বাড়াতে পারে।
- অ্যালার্জিঃ কিছু লোকের কালোজিরাতে এলার্জি থাকতে পারে। কালোজিরা খাওয়ার পর আপনার যদি কোন ধরণের এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
- ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়াঃ কালোজিরা কিছু ঔষধের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে পারে। আপনি যদি ঔষধ সেবনরত অবস্থায় কালোজিরা খেতে চান তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
- পেটের সমস্যাঃ অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খেলে আপনার পেট ফোলা, বমি বমি ভাব, গ্যাস ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- ত্বকের সমস্যাঃ কারো কারো ত্বকে কালোজিরা খাপ খাওয়াতে পারে না। কালোজিরা ত্বকে লাগালে অনেকের ত্বকে চুলকানি, লালচে দাগ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
আসলে, কালোজিরার অপকারিতার চেয়ে উপকারিতা অনেক বেশি। তাই আপনার অবশ্যই কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত।
কালোজিরার মধ্যে থাকা পুষ্টিউপাদান
কালোজিরা একটি অসংখ্য পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ বীজ। এটি বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। বহু বছর ধরে কালোজিরা আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কালোজিরার পুষ্টিউপাদান গুলো সম্পর্কে আজকে আমরা আপনার সাথে আলোচনা করছি। চলুন তাহলে বিস্তারিত জেনে নিন।
আরো পড়ুনঃ স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমিষের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
কালোজিরার প্রধান পুষ্টিউপাদান গুলো হলোঃ
- প্রোটিনঃ কালোজিরাতে উচ্চ মানের প্রোটিন থাকে যা শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে।
- শর্করাঃ কারোজিরাতে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।
- স্নেহঃ কালোজিরাতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
- ভিটামিনঃ কালোজিরাতে ভিটামিন এ, বি, সি ও ই প্রচুর পরিমাণে থাকে যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীর সুস্থ রাখে।
- খনিজ পদার্থঃ কালোজিরাতে ক্যালসিয়াম, আয়রণ, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে প্রচুর পরিমাণে যা হাড়,দাঁত এবং রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ কালোজিরাতে থাইমোকুইনিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মুক্ত রেডিকেলের ক্ষতি থেকে কোষকে রক্ষা করে।
কালোজিরার অন্যান্য উপকারি উপাদানঃ
- নাইজেলোনঃ কালোজিরা আছে নাইজেলোন। এটি একটি জৈব যৌগ যা ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
- স্থায়ী তেলঃ কালোজিরা তেল চুল ও ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। এটি চুল ও ত্বকের সমস্যাগুলো সমাধান বিশেষভাবে সাহায্য করে।
কালোজিরা ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
- রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ মিলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- হজম শক্তি বাড়ায়ঃ কালোজিরা হজমে সাহায্য করে এবং মধু হজম প্রকৃয়াকে আরো সহজ করে। এই দুটি উপাদান পেট ফাঁপা, পেট ব্যাথা, গ্যাস্টিকের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- শ্বাসকষ্ট দূর করেঃ কালোজিরা শ্বাসনালীর সমস্যা যেমন অ্যাজমা এবং ব্রঙ্কাইটিস দূর করতে সাহায্য করে। আবার মধু গলা ব্যাথা এবং কাশি কমাতে বিশেষভাবে সহায়তা করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ কালোজিরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
- ত্বকের সমস্যা দূর করেঃ কালোজিরার তেল ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- ব্রণ, বিভিন্ন দাগ ছোপ এবং চুলকানির মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আবার মধু ত্বককে ময়শ্চারাইজড করে এবং ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ কালোজিরাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে।
- শক্তি বাড়ায়ঃ মধু শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে এবং কালোজিরা শরীরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
কালোজিরাতে থাকা থাইমোকুইনোন শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি শরীরকে শক্তি দেয়, হজমে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আবার মধুতে রয়েছে অ্যান্টব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই মধু আমাদের শরীরকে শক্তি দেয়, হজমে সাহায্য করে এবং শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদানই আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। তবে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম আছে। এ দুটি উপাদান সঠিকভাবে খেলে আপনার শরীরের ব্যাপক উন্নতি হবে। আসুন তাহলে জেনে নিন মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম।
- গরম পানিতেঃ এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চমচ কালোজিরা গুঁড়ো ভালোভাবে মিশিয়ে খান। এটি আপনার হজমে সাহায্য করবে এবং শরীরে শক্তি জোগান দিবে।
- দুধের সাথেঃ এক গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে এক চামচ মধু এবং আধা চামচ কালোজিরা গুঁড়ো মিশিয়ে খান। এতে আপনার ঘুম ভালো হবে এবং শরীরকে শক্তিশালী করে তুলবে।
- চা বা কফির সাথেঃ চা বা কফির সাথে এক চামচ মধু ও আধা চামচ কালোজিরা গুঁড়ো মিশিয়ে খান। এতে চা বা কফির স্বাদও বেড়ে যাবো এবং আপনার শরীরের জন্যও অনেক উপকারি হবে।
- খাবারের সাথেঃ আধা চামচ কালোজিরা গুঁড়ো খাবারের সাথে মিশিয়ে খান এতে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
কতবার খাওয়া উচিতঃ
- সাধারণত, দিনে একবার বা দুইবার এই মিশ্রণ খেতে পারেন।
- তবে, আপনার শরীরে কোনো রোগ থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মধু ও কালোজিরার মিশ্রণ খাওয়া উচিত।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার পাশাপাশি মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে আপনি নিশ্চয়ই উপকৃত হয়েছেন।
কালোজিরা তেল খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা তেল একটি অত্যন্ত উপকারি প্রাকৃতিক উপাদান। এই তেল আপনি আপনার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করতে পারবেন। তবে কালোজিরা তেল খাওয়ার কিছু নিয়ম আছে। এই তেল কিভাবে খেতে হয় তা সম্পর্কে অনেকেই জনেন না। তাই আপনার সুবিধার্থে কালোজিরা তেল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকে আমরা কথা বলবো, আমাদের কথাগুলো নিশ্চয়ই আপনার উপকার আসবে। চলুন তাহলে মুল আলোচনায় যাওয়া যাক-
কালোজিরা তেল খাওয়ার সঠিক নিয়মঃ
- পরিমাণঃ সাধারণত দিনে ১-২ চা চামচ কালোজিরা তেল খাওয়া যায়। তবে, ব্যক্তির বয়স, ওজন এবং স্বাস্থ্যগত অবস্থা অনুযায়ী এই তেলের পরিমাণ কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
- সময়ঃ খালি পেটে খাওয়া হলে কালোজিরা তেলের উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ কালোজিরা তেল মিশিয়ে খাওয়া অনেকেই পছন্দ করে।
- খাবারের সাথেঃ আপনি খাবারের সাথেও কালোজিরা তেল খেতে পারেন। সবজি, স্যুপ বা সালাদে একটু কালোজিরা তেল দিয়ে খেতে পারেন।
- অন্যান্য উপাদানের সাথে মিশিয়েঃ আপনি মধু ও লেবুর রসের সাথে কালোজিরা তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। এই উপাদানগুলো একসাথে মিশিয়ে খেলেও তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি।
অতএব, কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আছে। আবার কালোজিরা তেলও অনেক উপকারি তাই এই তেলটি থেকে ভালো ফলাফল পেতে অবশ্যই নিয়ম মেনে খান।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যঃ কালোজিরা আপনার দাঁতের ব্যাথা কমাতে, মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং দাঁতের মাড়ির সংক্রমন প্রতিরোধ করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান দাঁতের ক্ষয় রোধ করে দাঁতকে করে তোলে শক্ত ও মজবুত।
- হজম শক্তি বাড়ায়ঃ কালোজিরা হজমের সমস্যা যেমন- গ্যাস, অম্বল কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। এটি হজম রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে খাবার ভালোভাবে হজম হতে সহয়তা করে।
- শ্বাসকষ্ট দূর করেঃ কালোজিরা শ্বাসনালীর সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। এটি কাশি, সর্দি, ব্রঙ্কাইটিসের লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ কালোজিরায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণের হাত থেকে আপনার শরীরকে রক্ষা করে।
- ত্বকের স্বাস্থ্যঃ কালোজিরা ত্বকের জন্যও বেশ উপকারি। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, ব্রণ দূর করে এবং ত্বকের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
কালোজিরা খেয়ে আপনার ও আপনার পরিবারের সকলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে, কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ কালোজিরার সবগুলো বিষয় আপনার জানা দরকার। তবে আপনার কোনো ধরণের শারীরিক সমস্যা থাকলে কালোজিরা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
- পাকস্থলীর সমস্যাঃ যদি আপনার পাকস্থলীর কোনো সংবেদনশীলতা থাকে, তাহলে রাতে কালোজিরা খাওয়ার পর অ্যাসিডিটি বা পেট ফোলা অনুভব করতে পারেন।
- ঘুমের উপর প্রভাবঃ কালোজিরা কিছু লোকের ক্ষেত্রে হজমে সহায়তা করে এবং শরীরে উষ্ণতা সৃষ্টি করতে পারে। যদি আপনি ইতোমধ্যেই ঘুমের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে রাতে কালোজিরা খাওয়া আপনার ঘুমকে আরো খারাপ করতে পারে।
- অন্যান্য ঔষুধের সাথে প্রতিক্রিয়াঃ যদি আপনি অন্য কোনো ঔষধ সেবন করে থাকেন, তাহলে কালোজিরা সেবনের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ।
- সাধারণত, কালোজিরা সকালে খালি পেটে খাওয়া ভালো। তবে, আপনি যদি রাতে কালোজিরা খেতে চান তাহলে খাবার খাওয়ার পরে খাবেন।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url