ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার উপায় জানুন
ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার উপায় জানুনআপনি কি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আপনি একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আজকের কনটেন্টে আপনি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কিভাবে নিবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
বাংলাদেশের অনেক মানুষ বিদেশে কর্মরত রয়েছে। এই প্রবাসীরা দেশে বসবাসরত তাদের পরিবার ও নিজের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করার জন্য দেশে আর্থিক উন্নতি করতে চাই ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে। প্রবাসীদের জন্য ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন দিচ্ছে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার উপায় সম্পর্কে।
পেইজ সূচীপত্রঃ ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার উপায় জানুন।
- প্রবাসী লোন কি ?
- ইসলামী ব্যাংকে কেন প্রবাসী লোন নিবেন।
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার উপায়।
- ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোনের সুবিধা।
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর চার্জ।
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি।
- প্রবাসী লোন মঞ্জুরীর জন্য ব্যাংকের কিছু শর্ত।
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের ঝুঁকিগুলো কি?
- প্রবাসী লোন নিতে যে তথ্যগুলো জানা জরুরী।
- লেখকের শেষ কথা।
প্রবাসী লোন কি ?
প্রবাসী লোন হচ্ছে বাংলাদেশের প্রবাসীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা একটি ঋণ সুবিধা। দেশে ফিরার পর প্রবাসীরা নিজের এবং পরিবারের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারে এই ঋণের মাধ্যমে। এই লোন সুবিধাটি প্রবাসীদের দেশে বসবাসরত পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন আর্থিক উন্নয়ন কাজে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করতে বা যেকোন উন্নয়নমূলক কাজে সহয়তা করে।
আরো পড়ুনঃ মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সুবিধা সম্পর্কে জানুন ।
যেমনঃ
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানঃ বিদেশে অর্থ উপার্জনকারী প্রবাসীরা তাদের পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার লক্ষ্যে দেশে ছোট বড় বিভিন্ন ধরণের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন এই ঋণ গ্রহণ করে।
- চিকিৎসা ও বিবাহঃ প্রবাসীরা এই ঋণ গ্রহণ করে তাদের দেশে বসবাসকারী পরিবার-পরিজনদের চিকিৎসা কিংবা বিবাহ খরচ বহন করে।
- সম্পত্তি ক্রয়ঃ এই মাধ্যমে প্রবাসীরা দেশে বাড়িঘর, জমি বা যেকোন ধরনের সম্পত্তি ক্রয় করতে পারেন যা তাদের নিজেদের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করে।
- শিক্ষাঃ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের শিক্ষিত করার জন্য বা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য প্রবাসীরা এ ধরনের প্রবাসী লোন নিয়ে থাকে।
- অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজঃ নিজের এলাকার বা পরিবারের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য প্রবাসীরা বিদেশে বসবাসরত অবস্থায় এই প্রবাসী লোন নিয়ে থাকে।
ইসলামী ব্যাংকে কেন প্রবাসী লোন নিবেন
প্রবাসীরা পরিবার-পরিজনদের ছেড়ে দেশের বাইরে গিয়ে অনেক কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করে, যাতে দেশে বসবাসরত তার পরিবারের লোকজন আর্থিকভাবে স্বচ্ছতা অর্জন করতে পারে। তাই তারা নিজেরও পরিবারের আর্থিক উন্নয়নের জন্য ও ভবিষ্যৎ নিরাপদ করার জন্য দেশে কিছু স্থায়ী সম্পদ গড়ে তুলতে চান। তাদের এই ইচ্ছা পূরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি এখন চালু করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যেহেতু বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক প্রবাসী লোন দিচ্ছে তাহলে কেন আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিবেন। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার বেশ কিছু কারণ আপনার সামনে তুলে ধরা হলোঃ
- ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী লেনদেনঃ ইসলামী ব্যাংকের লোনগুলো ইসলামী বিধি-বিধান অনুযায়ী শরিয়াহ মোতাবেক লেনদেন করা হয়, যেটা বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের জন্য বেশ আকর্ষণীয় একটি পদ্ধতি। তাই অনেকেই ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন নিতে চান।
- বিভিন্ন ধরনের লোনঃ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা, গৃহ নির্মাণ, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রবাসী লোন ইত্যাদি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকে আপনি ঋণ নিতে পারবেন। এই ব্যাংক থেকে কিছু শর্তসাপেক্ষে আপনি সকল বিভিন্ন ধরনের ঋণ সহজেই পেয়ে যাবেন।
- সহজ প্রক্রিয়াঃ সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অনেকেই ইসলামী ব্যাংকে লোন নেয়। এর কারণ হচ্ছে এই ব্যাংকে লোনের প্রক্রিয়াটা অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় অনেকটাই সহজ। এই কারণে মানুষ ইসলামী ব্যাংকে লোন নিতে আগ্রহী হয়। কেননা সহজ পথটাই সকলের কাম্য।
- বিশ্বাসযোগ্যতাঃ দীর্ঘদিন যাবত এই ব্যাংক মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করে আসছে। যার কারনে মানুষের এই ব্যাংকের প্রতি একটি আস্থা বা বিশ্বাস স্থাপন হয়েছে। আর এই বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি বলেই ইসলামী ব্যাংকে ঋণ নেয়ার জন্য মানুষের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার উপায়
ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান হিসাবে ইসলামী ব্যাংক একটি অনেক জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকদের ব্যাংকিং সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়। বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সুবিধার মধ্যে রয়েছে প্রবাসী লোন। এই ব্যাংকের বাংলাদেশের বাইরে যারা অর্থ উপার্জন করছে তাদের জন্য প্রবাসী লোন প্রদান করা হয়। প্রত্যেকটি ব্যাংকের নিজস্ব লোন নীতি ও শর্তাবলী থাকে। ইসলামী ব্যাংকের ও নিজস্ব লোন নীতি ও শর্তাবলী রয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের সর্বশেষ লোন নিতি ও শর্তাবলী জানতে হলে আপনাকে সরাসরি ইসলামী ব্যাংকের নিজস্ব শাখা বা কল সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে। ইসলামী ব্যাংকে প্রবাসী লোন নেয়ার জন্য সাধারণত যেসব জিনিসের দরকার হয় সেসব সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করব।
আরো পড়ুনঃ ব্যাংক একাউন্টে টাকা পাঠানোর নিয়ম।
সাধারণত, ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। সেগুলো হলোঃ
- পাসপোর্টঃ ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন নেয়ার জন্য আপনার অবশ্যই একটি বৈধ পাসপোর্ট এর ফটোকপি লাগবে।
- ভিসাঃ অবশ্যই আপনার বৈধ ভিসার ফটোকপি লাগবে।
- বৈদেশিক কর্মসংস্থানের চুক্তিঃ আপনি বিদেশে যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন সেই প্রতিষ্ঠানের বা কোম্পানির সাথে আপনার যে চুক্তিপত্র রয়েছে সেই চুক্তিপত্রের একটি ফটোকপি লাগবে।
- বেতন স্লিপঃ বিদেশে আপনি যে কর্মসংস্থানের জন্য কাজ করছেন সেখানে আপনি যে বেতন পেয়ে থাকেন সেই বেতনের আপনাকে একটি বেতন স্লিপ প্রদান করা হয়। সেটার সর্বশেষ যে বেতন স্লিপ আপনি পেয়েছেন সেই বেতন স্লিপের একটি ফটোকপি লাগবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্টঃ আপনার ব্যাংক একাউন্টে আপনি যে লেনদেন করেছেন সেই লেনদেনের সর্বশেষ কয়েক মাসের স্টেটমেন্ট লাগবে।
- জামানতঃ ব্যাংকের নির্ধারিত নিয়ম বা শর্ত অনুযায়ী আপনাকে কিছু জামানত হিসেবে প্রদান করতে হবে।
- অন্যান্য কাগজপত্রঃ এগুলো ছাড়াও ব্যাংক আপনার কাছে আরো অন্যান্য কাগজপত্র চাইতে পারে, সেগুলোও ব্যাংকে প্রদান করতে হবে।
ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোনের সুবিধা
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অনেক কষ্টে অর্থ উপার্জন করে। প্রবাসীদের দেশে নিজের বা পরিবারের জন্য ব্যবসা, শিক্ষা,চিকিৎসা, বাড়িঘর তৈরি ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে একসঙ্গে বেশি অর্থের প্রয়োজন হয়। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য ইসলামী ব্যাংক প্রবাসীদের লোন প্রদান করে থাকে। আর এসব লোনের রয়েছে যথেষ্ট সুযোগ সুবিধা। নিচে ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোনের সুবিধা গুলো তুলে ধরা হলোঃ
১। কম সুদঃ ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী চলে। আর ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী সুদ না নিয়ে মুনাফা ভিত্তিক লোন প্রদান করা হয়।২। দ্রুত লোন প্রক্রিয়াঃ ইসলামী ব্যাংকে লোনের প্রক্রিয়াগুলো তুলনামূলকভাবে অনেক দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হয় যার ফলে আপনি লোনের টাকাটা খুব তাড়াতাড়ি হাতে পেয়ে যাবেন।
৩। বিভিন্ন ধরনের লোন সুবিধাঃ প্রবাসীরা যেহেতু দেশের বাইরে অনেক কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করে তাই এই ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের লোন সুবিধা দিয়ে থাকে। সেই লোন সুবিধাগুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- গৃহ নির্মাণ লোনঃ আপনি যদি প্রবাসী হয়ে থাকেন দুর নিচের দেশে বাড়ি কিনতে এবার নির্মাণ করতে চান তাহলে এই ব্যাংক আপনাকে দেশে বাড়ি নির্মাণ বা কিনার জন্য হোম লোন দিবে।
- ব্যবসা লোনঃ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার জন্য এই ব্যাংক প্রবাসীদের ব্যবসা লোন দিয়ে থাকে। যাতে আপনি প্রবাসে থেকেও নিজের দেশে ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে পারেন।
- শিক্ষা লোনঃ এক্ষেত্রে সন্তানদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রবাসীদের এই ব্যাংক শিক্ষা লোন প্রদান করে থাকে।
- অন্যান্য ব্যয়ের লোনঃ পারিবারিক অন্যান্য বিভিন্ন জরুরী কাজে ব্যয় করার জন্য এই ব্যাংক প্রবাসীদের লোন প্রদান করে থাকে।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর চার্জ
- ঋণের পরিমাণঃ প্রবাসীর হলে চার্জ নিয়ে বলতে গেলে বলা যায়, ঋণের পরিমাণ যত বেশি হবে লোনের চার্জ তত বেশি হতে পারে।
- ঋণের ধরনঃ প্রবাসী লোন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তোর বিভিন্ন ধরনের প্রবাসী লোনের জন্য ফোনের চার্জের হারও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হবে।
- লোনের মেয়াদঃ প্রবাসী লোনের মেয়াদ যত বেশি হবে, লোনের চার্জও তত বেশি হতে পারে। যদিও একেক ব্যাংকের নিয়ম একেক রকম।
- ব্যাংকের বিভিন্ন অফারঃ ইসলামী ব্যাংক কাস্টমারদের আকৃষ্ট করার জন্য একেক সময় একেক অফার দিয়ে থাকে। তাই প্রবাসী লোন এর চার্জের পরিমাণ এই অফারের কারণে কখনো কম বা কখনো বেশি হতে পারে।
- প্রসেসিং ফি- প্রবাসী লোনের কাজ প্রসেসিং করার জন্য ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী প্রসেসিং ফি দিতে হবে। অর্থাৎ ব্যাংক যেটা ফি নির্ধারিত করে রাখবে সেটা দিতে হবে।
- সার্ভিস চার্জ- প্রবাসী ঋণের জন্য ব্যাংক আপনাকে যে সার্ভিস দিবে এই সার্ভিসের জন্য ব্যাংক আপনার কাছে একটি চার্জ অফার করবে। আর আপনাকে সেই সার্ভিস চার্জটি প্রদান করতে হবে।
- মূল্যায়ন ফি- প্রবাসী লোনের জন্য জামানত হিসেবে দেওয়া সম্পত্তির মূল্যায়নের একটি নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হবে। যদিও একেক ব্যাংকের একেক রকম নিয়ম রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি
আপনাকে প্রবাসী লোন নেয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংকের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। নিচে দেয়া পদ্ধতিগুলো আপনি যদি ভালোভাবে পড়েন তাহলে আপনার জন্য তা অনেক উপকারী হবে। আর ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন সম্পর্কে জানতে পারবেন। আসুন তাহলে পদ্ধতিগুলো জেনে নিনঃ
প্রথম পদক্ষেপঃ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন
- ব্যাংকের শাখা পরিদর্শনঃ আপনি যদি নিজে সরাসরি ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে লোন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে লোন অফিসারদের সাথে কথা বলেন তাহলে সেটা সবচেয়ে বেশি ভালো হবে। আপনাকে লোনের বিষয়ে সব কিছু যেমন-লোনের ধরন, সুদের হার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আরো অন্যান্য সকল বিষয় বুঝিয়ে দিবে।
- ব্যাংকের ওয়েবসাইটঃ ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইট ভিজিট করলে লোনের বিষয়ে সকল বিস্তারিত তথ্য আপনি পেয়ে যাবেন। এখানে অনলাইনে আবেদন করারও সুযোগ থাকে, আপনি অনলাইনেও আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন।
- হেল্পলাইনঃ এক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকের হেল্পলাইন বা কল সেন্টারে কল করেও আপনার সকল প্রয়োজনীয় প্রশ্নের উত্তর পেতে পারেন।
দ্বিতীয় পদক্ষেপঃ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন
যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনাকে সংগ্রহ করতে হবে সেই সকল কাগজপত্রের একটি তালিকা নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- পাসপোর্ট এর ফটোকপি।
- ভিসার ফটোকপি।
- বৈধ কর্মসংস্থানের প্রমাণ (যেমন- কাজের চুক্তিপত্র, বেতন স্লিপ ইত্যাদি )
- গত কয়েক মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- জমি বা বাড়ির কাগজপত্র (যদি থাকে )
- দুই জন জামিনদার এর তথ্য
তৃতীয় পদক্ষেপঃ আবেদন করুন
- আবেদন ফরম পূরণঃ আপনি নিজে সরাসরি ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন আবার অনলাইনেও আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবেন।
- কাগজপত্র জমা দিনঃ পূরণকৃত আবেদন ফরম এবং ব্যাংকের শর্তাবলী অনুযায়ী সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দিন।
চতুর্থ পদক্ষেপঃ লোন অনুমোদন
- কাগজপত্র যাচাইঃ আপনি যে সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছেন সেগুলো ব্যাংক ভালোভাবে যাচাই করবে।
- সাক্ষাৎকারঃ ব্যাংকের সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে ব্যাংক আপনার সাক্ষাৎকারও নিতে পারে।
- লোন অনুমোদনঃ আপনার আবেদনটি যদি ব্যাংকের অনুমোদন পেয়ে যায় তাহলে ব্যাংক আপনাকে লোনের জন্য অফার করবে।
পঞ্চম পদক্ষেপঃ লোন গ্রহণ
- লোন চুক্তির স্বাক্ষরঃ ব্যাংক আপনাকে যে শর্তাবলী দিবে সেগুলো ভালোভাবে পড়ে, বুঝে তারপর লোন চুক্তিতে স্বাক্ষর করুন। (এক্ষেত্রে আপনি নিজে বুঝতে না পারলে লোন অফিসারের সাহায্য নিন )।
- লোন সংগ্রহঃ লোনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর লোনের টাকা আপনি সংগ্রহ করতে পারবেন।
প্রবাসী লোন মঞ্জুরীর জন্য ব্যাংকের কিছু শর্ত
- বাংলাদেশের নাগরিকঃ আপনি যদি আবেদনকারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে, এটাই হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার প্রথম শর্ত। আপনি যদি বাংলাদেশের নাগরিক না হন তাহলে ইসলামী ব্যাংক আপনার প্রবাসী লোনের আবেদন গ্রহণ করবে না।
- আবেদনকারীর আয়ের পরিমাণঃ প্রবাসী লোন মঞ্জুরীর জন্য ব্যাংকের যে একটি শর্ত হচ্ছে আবেদনকারীর আয়ের পরিমাণ ব্যাংকের দেয়া শর্ত অনুযায়ী হতে হবে। অর্থাৎ আপনি যদি প্রবাসী লোনের জন্য আবেদনকারী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আয় কত হলে আপনি প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন সেটা ব্যাংক আপনাকে নির্ধারণ করে দিবে। ব্যাংকে নির্ধারণ করে দেয়া আয়ের পরিমাণ আর আপনার আয়ের পরিমাণ যদি না মিলে তাহলে প্রবাসী লোনের জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন না। তাই ব্যাংকের শর্তাবলীতে আবেদনকারীর আয় এর জন্য যে আয় নির্ধারণ করে দেয়া আছে আপনাকে মিনিমাম ততো টাকা বেতন পেতে হবে।
- ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতাঃ প্রবাসী লোনের জন্য আবেদনকারী ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা রাখে কিনা ব্যাংক সেটাও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখবে। অর্থাৎ আপনি কখনো আর্থিক সমস্যায় পড়লেও ব্যাংকের দেয়ার ঋণ আপনি সময়মত পরিশোধ করতে পারবেন কিনা বা সময় মতো আপনার ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা আছে কিনা সেটা অবশ্যই ব্যাংক যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তাই আপনার ব্যাংকের প্রাপ্য ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা থাকাও ব্যাংকের শর্তাবলির মধ্যে থাকবে।
- জামিনদার এর আর্থিক সামর্থ্যঃ আপনি যদি কোন কারনে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে না পারেন অথবা আপনি যদি কোন দুর্ঘটনায় পড়ে যান তাহলে আপনি যাদের জামিনদার হিসেবে ব্যাংকের সামনে উপস্থাপন করেছেন তাদেরকে আপনার ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তাই জামিনদানদের আর্থিক সামর্থ্য কেমন সেটাও ব্যাংক অবশ্যই পর্যবেক্ষণ করে দেখবে। জামিনদারদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকলে ব্যাংকের জামিনদার হিসেবে গ্রহণ করবে না।
- অন্যান্য বিভিন্ন শর্তঃ ব্যাংকের আরও অন্যান্য অনেক ধরনের শর্ত থাকতে পারে যেগুলো অবশ্যই মেনে নিতে হবে। ব্যাংকে যাবতীয় শর্ত আপনি নাম আনতে পারলে ব্যাংক আপনাকে লোন প্রদানের উপযোগী কাস্টমার হিসেবে গ্রহণ করবে না। যার ফলে আপনি আপনার আবেদনকৃত ঋণটি পাবেন না।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের ঝুঁকিগুলো কি
- ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতাঃ যদি আপনি কোনো কারণে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তাহলে আপনি ব্যাংকে যে জামানত দিয়েছেন আপনার সেই জামানত জব্দ হতে পারে এবং আপনার ক্রেডিট স্কোর নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
- ব্যাজের হারের পরিবর্তনঃ ইসলামী ব্যাংকের ব্যাজের হার সময়ের সাথে সাথে যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে, যার ফলে আপনার মাসিক কিস্তির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত চার্জঃ আপনার ঋণ গ্রহনের সাথে সাথে আপনাকে কিছু অতিরিক্ত চার্জ ব্যাংকে দিতে হয়। যেমন-সার্ভিস চার্জ, প্রসেসিং ফি, একাউন্ট চার্জ ইত্যাদি প্রদান করতে হয়।
- বৈদেশিক মুদ্রার রিস্কঃ যেহেতু আপনি বিদেশে কাজ করেন তাই আপনি যদি বিদেশি মুদ্রায় ঋণ নেন এবং মুদ্রার মূল্য যদি পরিবর্তিত হয় তাহলে ব্যাংকে আপনাকে বেশি টাকা পরিশোধ করতে হতে পারে।
- কাজ হারানো বা আয় কমে যাওয়াঃ যদি আপনি কোনো কারণে আপনার কাজটি চলে যাই বা কোন কারণে যদি আপনার ইনকামের পরিমাণ কমে যায় তাহলে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা আপনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়বে।
প্রবাসী লোন নিতে যে তথ্যগুলো জানা জরুরী
আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নিতে চান তাহলে এই জরুরী তথ্যগুলো অবশ্যই আপনাকে জেনে নিতে হবে। লোন নেয়ার আগে আপনি যদি এ সকল তথ্য গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে পারেন তাহলে আপনাকে আর কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। লোন নেয়ার পরে আপনি যাতে কোন সমস্যাই না পড়েন তাই সুবিধার্থে আপনার সাথে কিছু জরুরী তথ্য শেয়ার করছি। তথ্যগুলো অবশ্যই মনে রাখবেন-
- লোনের সুদঃ ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক দেয়। তাই এই ব্যাংক সুদের পরিবর্তে প্রফিট শেয়ারিং বা মূলধন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে লোন দিয়ে থাকে।
- লোন পরিশোধঃ লোন পরিশোধ করার জন্য ব্যাংক আপনাকে একটি সময় নির্ধারিত করে দিবে। সেই নির্ধারিত সময়ে আপনাকে লোন পরিশোধ করতে হবে।
- অন্যান্য শর্তাবলীঃ লোন গ্রহণ করার আগে লোনের সকল শর্তাবলী ভালোভাবে পড়ে ও বুঝে নিন।
আপনার সহায়ক কিছু লিংকঃ আপনার কাজের সুবিধার্থে আপনার সবকিছু লিংক নিচে দিয়ে দেয়া হলো-
- প্রবাসী কল্যান ব্যাংকঃ লিংকে ক্লিক করুন।
- ইসলামী ব্যাংকের ওয়েবসাইটঃ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ওয়েবসাইট লিংক
বিঃদ্রঃ এই তথ্যটি সাধারণ ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্যের জন্য ইসলামী ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url