দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ জানুন
আমাদের শরীরে খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কি জেনে নিন আপনি কি ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন ? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু মানুষের দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে কিছু লক্ষণ লক্ষ্য করা যায় যেটা সম্পর্কে আমাদের অনেকের ধারণা নেই। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক মানুষের দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ লেখকের শেষকথা।দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ।
- ভিটামিন ডি কি ?
- ভিটামিন ডি এর সাতকাহন ।
- ভিটামিন ডি এর উৎস ।
- সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার কোনটি ।
- ভিটামিন ডি ৩ এর উপকারিতা ।
- ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ বাড়ছে কেন ।
- পুরনো ব্যথা ভিটামিন ডি এর অভাবে পূণঃআক্রমণ করে।
- দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ ।
- শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ ।
- লেখকের শেষকথা।দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ।
ভিটামিন ডি কি ?
ভিটামিন ডি হলো ফ্যাট সল্যুবল বা চর্বি দ্রবণীয় জাতীয় ভিটামিন। এই ভিটামিন আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি এমন একটি ভিটামিন যা আমাদের দেহকে মজবুত ও শক্ত করে। কড ও হাঙ্গর মাছের কলিজা থেকে তেল সংগ্রহ করা হয়। এ তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন ডি থাকে।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম।
আপনারা হয়তো লক্ষ্য করে দেখবেন যে, ছোট্ট শিশুদের সকালের রোদে শুইয়ে রাখা হয়। এতে সূর্যের আলো ত্বক বা চামড়ার নিচে থাকা চর্বির সাহায্যে ভিটামিন ডি তৈরি করে। ভিটামিন ডি-এর অভাবে শিশুদের রিকেটস রোগ হয়। এ রোগের হাড় শক্ত ও মজবুত হয় না, ফলে হার বেঁকে যায়। তাই হাড়কে শক্ত মজবুত করতে ভিটামিন ডি অতীব প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি এর সাতকাহন
বয়স এগিয়ে চলেছে মধ্য বয়সের দিকে। আর তার হাত ধরে জাঁকিয়ে বসছে ব্যাথা-বেদনা। ব্যথার ওষুধে সাময়িক কমছে, শুরু হচ্ছে আবার। আর অদ্ভুত ব্যাপার, ব্যথার কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই। আজ এখানে তো কাল সেখানে। কখনো সারা শরীরে। ডাক্তার দেখানো হলো। খুঁজতে শুরু করলেন তিনি। ব্যথার কারণ কি ? ব্যথার কারণ তো খুঁজে বের করতে হবে।
রোগের কারণ খুঁজতে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা গেল ভিটামিন ডি অনেক কম আছে শরীরে। ফলে সুষম খাওয়া-দাওয়া সত্ত্বেও ক্যালসিয়াম হাড়ে ঢুকতে পারছে না। দিন দিন পাতলা হচ্ছে হাড়। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট দিয়ে বাড়ি পাঠালেন ডাক্তার। এতদিনের এত সমস্যা মিটে গেল দিন দশেকের মধ্যে। কাজেই বোঝাই যাচ্ছে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে শরীরে ব্যথা বেদনা দেখা দিতে পারে।
ভিটামিন ডি এর উৎস
ভিটামিন ডি এর উৎস সূর্যের মৃদু আলো এবং খাবার। কিন্তু ষাট বছর বয়সের অতিরিক্ত বয়সের মানুষ অনেক সময় চর্মের সংকোচন ও ড্রাইং জাতীয় কারণে আলো থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারেনা অথবা শীত প্রধান দেশের শিশুরাও সে তার প্রয়োজনের আলো দেহে পায় না, ইত্যাদি নানা কারণে যারা সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত তাদের উচিত ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া।
গ্রীষ্ম প্রধান দেশের বেশিরভাগ ভিটামিন ডি আমরা সূর্যের আলো এবং সামান্য খাবার থেকে পেয়ে যাই, বিধায় বাড়তি ভিটামিন ডি জাতীয় ঔষধ সেবন করার প্রয়োজন হয় না। (বিশেষ করে তরুণ বয়সে ) যা মাত্র ১৫-২০ মিনিটের রোদ ও সামান্য ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারেই পূরণ হয়ে যায়। যারা ভিটামিন ডি এর অভাব অনুভব করেন তাদের লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। সোডিয়াম জাতীয় খাবার লবণ বেশি খেলে ক্যালসিয়াম থেকে শোষণ করে নেই বিধায় ভিটামিন ডি ও অন্যান্য মিনারেল সমূহের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয়।সেজন্য বয়স্কদের বেলায় বাড়তি লবণ খাওয়া থেকে যতই বিরত থাকবেন ততই হারকে মজবুত ও দীর্ঘ রাখবেন বেশি।
সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার কোনটি
সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল -
- সামুদ্রিক মাছ (৩ আউন্স ৩০০),
- গরুর কলিজা (৩ আউন্স ৪২),
- ডিমের কুসুম ( ১টি-৪১),
- দুধ-(এক কাপ ৯৮),
- দই- (ছয় আউস ৮০),
- কমলার রস (৮ আউন্স১০০),
- (কড লিভার তেল ১ চামচ-১৩৬০)
- এছাড়াও ছোট মাছের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি বিদ্যমান।
গর্ভবতী ও বুকে দুধ খাওয়ানো মহিলাদের ভিটামিন ডি ১০ মাইক্রগ্রাম প্রতিদিন প্রয়োজন। ৬মাস থেকে ৫ বছর বয়সী সকল শিশুদের ভিটামিন ডি ড্রপ আকারে খাওয়াতে পারেন যদি সে পর্যন্ত পরিমাণ মায়ের বুকের দুধ থেকে ভিটামিন ডি না পায়। ৬০ এর উপরে যাদের বয়স তাদের জন্যও ১০ মাইক্রগ্রাম ভিটামিন ডি প্রয়োজন। তবে সব সময় চেষ্টা করবেন খাবার থেকে সংগ্রহ করার জন্য। ঔষধ সেবনের ব্যাপারে যাদের বংশগত কিডনি পাথর হওয়ার ইতিহাস আছে, যারা ইতিমধ্যেই কিডনির রোগ, লিভারের রোগ বা হরমোন অভাব জনিত রোগে ভুগছেন তাদের জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার নিষেধ।
ভিটামিন ডি অতিরিক্ত সেবনে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে ৪৩% পাথর জাতীয় অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা আছে সে কথাটি ভুলে গেলেও চলবে না। ভিটামিন ডি জাতীয় কিছু ক্রিম ও সিরাম অয়েল বর্তমানে অন্যান্য অসুখে বেশ কার্যকর। একটিভ ভিটামিন ডি সিরাম ওয়েল ক্ষত নিরাময় ও সোরাইসিস এবং সানপ্রটেকশন এর জন্য বেশ ভালো উপকারী। বিশেষ করে সোরাইসিসের জন্য ভিটামিন ডি ক্রিম বেশ ভালো উপকারী যা ইউরোপিয়ান দেশে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়।
ভিটামিন ডি ৩ এর উপকারিতা
ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের রিকেটস (হাড় বাঁকা), অস্ট্রিয়াথ্রাইটিস, বয়স্কদের বেলায় হাড়ের ক্ষয় রোগ ইত্যাদি অশোক দেখা যায়। যেহেতু ভিটামিন ডি আগামী প্রজন্মের (শিশুদের) ভ্রুণ থেকে আঠারো মাস পর্যন্ত এবং বয়স্ক অবস্থায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেহেতু সকলের আরেকটু বিস্তারিত জানা দরকার বলে আমি মনে করি। অন্তত প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত বা অনেকে ধারণা সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি আছে ইহাও সম্পূর্ণ ভুল।মূলত আমাদের চামড়ার নিচে ভিটামিন ডি-২ রয়েছে যা সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে ভিটামিন ডি-৩ এ পরিবর্তিত হয়ে সরাসরি চামড়ার নিচ থেকে অতি বেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে ভিটামিন ডি-৩ উৎপাদন করে।
ভিটামিন ডি আমাদের চামড়ার নিচে চর্বিতে জমতে সাহায্য করে যা সরাসরি দেহের অভ্যন্তরের ক্যালসিয়াম মজুদ বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করে ভিটামিন ডি সরাসরি হাড় গঠন করে, তাও সম্পূর্ণ সঠিক নয় বরং বলতে পারেন আমাদের দেহের হাড়কে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে এবং হাড়ের গঠন মজবুত করে।অর্থাৎ ইহা সরাসরি হাড় গঠন করে না বরং ভিটামিন ডি এর প্রধান কাজ হল আমাদের খাদ্যের ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস অন্ত্রে থেকে শোষিত হতে সাহায্য করা, (ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস সুস্থ এবং শক্তিশালী হাড় গঠন করে)। সুতরাং ভিটামিন ডি ৩ শক্তিশালী ও সুস্থ হাড় গঠনের জন্য সত্যি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ বাড়ছে কেন
ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ বাড়ার প্রধান কারণ লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন। রোদকে মানুষ যবে থেকে ভিলেন ভাবতে শুরু করেছেন তবে থেকেই ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ বাড়-বাড়ন্ত । ঠান্ডা, পর্দা টানা আধো অন্ধকার ঘরে থাকার প্রবণতা বাড়ছে। বড় বড় অফিস কাছারি সবই এয়ারকন্ডিশন্ড ও কৃত্রিম আলোয় আলোকিত। সাত সকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বাসে, ট্রেনে বা গাড়িতে চড়ে অফিসে একবার ঢুকে পড়লে সারাদিন একেবারে অসূর্যমস্পশ্যা। গাড়িতেও ঠান্ডা মেশিন। ফলে বন্ধ কাঁচের আড়াল থেকে রোদকে ধরাছোঁয়ার উপায় নেই। সে কাজ গারো নীল রঙের হলে তো হয়েই গেল। ফলে অফিসে দিনে ৮-১০ ঘন্টা চেয়ারবন্দী মানুষদের অবস্থা রীতিমতো শোচনীয়।
অবস্থা শোচনীয় ঘরে থাকা মানুষদেরও। দিনের যে সময়ে শরীর সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি শুষে নিতে পারে, সে সময় কেটে যায় ঘরের কাজে, টিভি দেখে বা দিবা নিদ্রায়। কখনও আবার বাইরে বেরোতে হলে ত্বক সচেতন মানুষ পড়েন শরীর ঢাকা পোশাক। মুখের সানস্ক্রিন, চোখে সানগ্লাস। মাথায় থাকে ছাতা। রোদ তবে শরীরে লাগবে কি করে। শরীরে যতটা ভিটামিন ডি দরকার তার ৮০ শতাংশই তৈরি হয় রোদ আর ত্বকের যোগসাজশে। কাজে যত রোদে অনীহা তত ভিটামিন ডি এর অভাব।
পুরনো ব্যথা ভিটামিন ডি এর অভাবে পূণঃআক্রমণ করে
পুরাতন গায়ে ব্যথা, পুরাতন পায়ের গিটে ব্যথা, পুরাতন মাংসপেশিতে ব্যথা, দুর্ঘটনা পরবর্তী অপূরণীয় নির্দিষ্ট সময় ভিত্তিক ব্যথা, পুরাতন মেরুদন্ডে ব্যথা, শক্ত মাংসপেশিতে অসহনীয় অনির্দিষ্ট ব্যথা সহ সকল প্রকার মানবদেহের বহির্কাঠামোগত, ব্যথার মূল রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা যা পেয়েছেন তার একটি সাধারণ কারণ হচ্ছে আনুপাতিক হারে ভিটামিন ডি এর অভাবেই হয়।
কাজেই উপরের পর্যালোচনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে ভিটামিন ডি কমবেশি সকলের প্রয়োজন হলেও শিশু এবং বয়স্কদের জন্য খুব বেশি প্রয়োজন এবং একজন গর্ভবতী জন্য প্রয়োজন যাতে তার আগামী সন্তানটি সুদৃঢ় ও মজবুত অবকাঠামো নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে।
দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০টি লক্ষণ
দেহে যে লক্ষণ গুলো মিলে গেলে বুঝবেন আপনার শরীরে রয়েছে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি। ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। বিশেষ করে হাড় ও দাঁতের সুস্থতার জন্য ভিটামিন ডি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন। ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড়ের দুর্বলতার পাশাপাশি শরীরের নানান রকমের বিরূপ প্রভাব পড়ে। এমনি ভিটামিন ডি এর অভাবে ওজনও বেড়ে যায়। তাই ভিটামিন ডি এর অভাব আছে কিনা সেটা আগেই সনাক্ত করে সে অভাব পূরণ করে ফেলা উচিত। জেনে নিন কিছু লক্ষণ সম্পর্কে যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব আছে। নিচে দেহে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত ১০ টি লক্ষণ তুলে ধরা হলোঃ
- মাংসপেশি দুর্বলতাঃ মাংসপেশের দুর্বলতার অন্যতম কারণ হতে পারে শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব। বিশেষ করে মাংসপেশে বেড়ে যাওয়া এবং মাংসপেশি কাপার মতো সমস্যাগুলো সাধারণত ভিটামিন ডি এর অভাবেই হয়ে থাকে।
- বিষন্নতাঃ ভিটামিন ডি এর অভাবে বিষণ্ণতা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। সারাক্ষণ মানসিক চাপ অনুভূত হলে এবং কোন কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত বিষন্নতায় রোগা হতে পারে ভিটামিন ডি এর অভাবের লক্ষণ।
- খুব সহজেই হাড়ে ফাটলঃ একটু পরে গেলে বা আঘাত পেলে যদি হাড়ের চিট ধরে যায়। কিংবা প্রচন্ড ব্যথা বা ফাটল ধরে তাহলে বুঝে নিন যে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব আছে।
- দাঁতের ভঙ্গুরতাঃ একটু শক্ত হাড় চিবুতে গেলেই কি আপনার দাঁত ভেঙে যায় ? আপনার দাঁত যদি অতিরিক্ত ভঙ্গুর হয়ে থাকে তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এটিও ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত একটি লক্ষণ।
- উচ্চ রক্তচাপঃ অতিরিক্ত রক্তচাপও হতে পারে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত একটি কারণ। শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি না থাকলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
- দেহে বিভিন্ন জায়গায় ব্যথাঃ কখনো হাতে ব্যথা, কখনো পায়ে ব্যথা, কখনো বুকে আবার কখনো পিঠে ব্যথা, কখনো আবার শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা। এরূপ দেহের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাথা অনুভূত হলে বুঝে নিতে হবে এটিও ভিটামিন অভাবজনিত একটি কারণ হতে পারে।
- ঘুমের ব্যাঘাতঃ আপনার যদি প্রতিদিন ঘুমাতে সমস্যা হয়, দেরিতে ঘুম আসে কিংবা চট করে ঘুম ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকা সম্ভাবনা আছে। কারণ ভিটামিন ডি এর অভাবে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়।
- সাধারণ গ্লানি বা ক্লান্তবোধঃ ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে সাধারণ গ্লানি বা ক্লান্তবোধ। যদি অল্প কোন কাজেই শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার শরীরে ভিটামিন দিয়ে ঘাটতি আছে।
- সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে কষ্ট অনুভবঃ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে যদি আপনার কষ্ট অনুভূত হয় তাহলে বুঝতে হবে এটা ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত কারণ। কারণ ভিটামিন ডি এর অভাবে শরীর এতটা দুর্বল অনুভূত হয় যে সিঁড়ি দিয়ে উঠলেও অনেক কষ্ট হয়।
- মেঝে বা চেয়ার থেকে উঠতে কষ্ট অনুভবঃ মেঝে বা চেয়ার থেকে উঠতে কষ্ট অনুভূতি হলে আপনি ধরে নিবেন আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি আছে। যার ফলে মেঝে বা চেয়ার থেকে উঠতে আপনার শরীর কষ্ট অনুভব করছে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ
শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেটস রোগ (হাড় বাকা), শিশু পেশী খিঁচুনি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা, হাঁপানি, চর্মরোগ এবং এইসব শিশুদের ক্যালসিয়ামের স্বল্পতা ও দেখা দেয়, সেজন্য শীত প্রধান দেশের শিশুরা ৪০% বেশি আক্রান্ত হয় গ্রীষ্ম প্রধান দেশের চাইতে। তার কারণ সেখানে শিশুরা রোদ্র থেকে ভিটামিন ডি যোগান খুব কম পায় বিধায় খাবার থেকে গ্রহণ করলেও অনেক সময় ঠিকমতো হজম শক্তির অভাবে বন্টিত হয়না (ব্রিটেনে প্রতি ৫জনে একজন ভিটামিন ডি সল্পতায় ভোগে থাকেন) । তীব্রভাবে ভিটামিন ডি এর অভাব থাকলে শিশুদের যা হতে পারে, তা হল-শিশুর মস্তিষ্কের খুলি, পায়ের হাড় নরম হয়ে বা বাঁকা হয়ে যাওয়া, সামান্য একটু চাপে পায়ের হাড়ে যন্ত্রণায় কাঁদে শিশুরা যা পেশী যন্ত্রণা বা পেশী দুর্বলতার লক্ষণ।
আরো পড়ুনঃ শিশুর পরিচর্যা কিভাবে করবেন কয়েকটি নিয়ম জানুন ।
এটাই হচ্ছে রিকেটস।ভিটামিন ডি এর অভাব হলে এবং ক্ষুদ্রান্ত থেকে ক্যালসিয়াম শরীরে প্রবেশ হতে না পারলে রিকেটস হয় কেননা হাড় গঠনের জন্য ক্যালসিয়াম এবং ফসফেট অতি প্রয়োজনীয় উপাদান কিন্তু ভিটামিন ডি তা ক্ষুদ্রান্তে শোষণে সাহায্য করে বিধায় হাড়ের ভঙ্গুরতা বা ক্ষয় হওয়া অথবা নরম হওয়া থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে শিশুদের বেলায় জন্মের ৩ মাস থেকে ১৮ মাস পর্যন্ত যদি তার শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি যোগান দেয়া না হয় তখন তার পা বা হাত বেঁকে যাওয়া বা ভঙ্গুর হওয়া দেখা দিতে পারে বিধায় শিশুদের ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার দেওয়া অত্যন্ত জরুরী এবং সেই সাথে ভিটামিন ৩ এ পৌঁছানোর জন্য প্রতিদিন সকালে রোদে ১৫/২০ মিনিট রাখা কর্তব্য।(তবে কড়া রোদের তাপ বা বেশিক্ষণ রৌদ্রে রাখা মোটেই নিরাপদ নয়, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে )।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url