দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ কেন করা হয় জানুন
আমাদের শরীরে খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কি জেনে নিন আপনি জানেন কি দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ কিভাবে করা হয় ? যদি এই বিষয়ে আপনি জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। আজকের আর্টিকেলটি পুরোটাই পড়লে আপনি জানতে পারবেন দেহের চাহিদা অনুযায়ী শ্রেণীবিভাগ কিভাবে করা হয়।
বেঁচে থাকার জন্য আমরা সবাই খাবার খাই। কিন্তু এই খাদ্য সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করার জন্য আপনার অবশ্যই জানা উচিত দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ কিভাবে করা হয়। যাতে আপনি আপনার নিজের জন্য এবং আপনার পরিবারের জন্য খাদ্যের সঠিক পুষ্টিমান নিশ্চিত করতে পারেন। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ কিভাবে করা হয়।
পোস্ট সূচীপত্রঃ দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ।
- খাদ্য কি?
- সুষম খাদ্য বলতে কি বুঝায় ?
- খাদ্য নিরাপত্তা কি ?
- খাদ্যের শ্রেণীবিভাগে শাক সবজির অবস্থান ।
- খাদ্যের পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টি জ্ঞান।
- কম চর্বিযুক্ত খাবার কোনগুলো।
- খাদ্য হিসেবে শাক সবজির শ্রেণীবিভাগ।
- দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ।
- খাদ্যের শ্রেণীবিভাগকেন করা হয় ?
- লেখকের শেষ বক্তব্য।দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ।
খাদ্য কি?
খাদ্য হলো আমাদের প্রথম ও প্রধান মৌলিক চাহিদা । সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই হয়তো বা খাদ্যই মানুষের প্রথম চাহিদা ছিল। প্রত্যেকটা প্রাণী খাদ্য গ্রহণ করেই জীবনধারণ করে। এখন খাদ্য কি-এই প্রশ্নের উত্তরে আপনি কি বলবেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে আপনি সাধারণত বলবেন, আমরা যা খাই তাই খাদ্য। কিন্তু এই উত্তরটি পুরোপুরি সঠিক নয়। বিজ্ঞানের ভাষায়, যা খেলে আমাদের দেহে শক্তি যোগায়, দেহের ক্ষয় পূরণ করে, দেহকে কর্মক্ষম ও শক্তিশালী করে, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, দেহে পুষ্টি যোগায়-তা-ই খাদ্য।
আরো পড়ুনঃ ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম।
দেহকে সুস্থ রাখতে হলে এবং দেহের সকল চাহিদা পূরণ করতে হলে আমাদের একরকম খাবার খেলে চলবে না। বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার আমাদের গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ খাদ্যের সকল উপাদান সমৃদ্ধ খাবার আমাদের নিয়মিত খেতে হবে। খাদ্য গ্রহণের ফলে শরীর তখনই সুস্থ, সবল, সুন্দর ও রোগবালাই মুক্ত থাকবে যখন আমরা সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে পারবো । সুষম খাদ্য গ্রহণ না করলে খাদ্যের পুষ্টিমান সঠিক হবে না। তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই সুষম খাদ্য রাখার চেষ্টা করতে হবে।
সুষম খাদ্য বলতে কি বুঝায় ?
যে খাদ্যে খাদ্যের সবগুলো উপাদান পরিমিত পরিমাণে থাকে সেটাই সুষম খাদ্য। আবার বলা যায় যে, যেসব খাদ্যে দেহে পুষ্টি, বৃদ্ধি, শক্তি লাভ প্রভৃতির জন্য প্রয়োজনীয় সব কয়টি খাদ্য উপাদান (যেমন-শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি) সঠিক পরিমাণে থাকে সেসব খাদ্যকেই সুষম খাদ্য বলে। সুস্থ দেহ, সকল দেহ ও কাজ করার শক্তির জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য। অনেকের ধারণা শুধু দামি খাবারের পুষ্টিমান বেশি থাকে। আসলে তা নয়, অনেক কম দামি খাবারেও অনেক বেশি পরিমাণ পুষ্টি থাকতে পারে। খাবারের সব রকম খাদ্য উপাদান পরিমাণ মতো থাকলে তা সুষম খাবার।
শুধু জানা প্রয়োজন কোন কোন খাবারে কি কি উপাদান আছে। ঠিকমতো এক খাবারের সাথে আরেকটা খাবার মিশিয়ে খাবারের পুষ্টিমান বাড়ানো যায় এবং খাবারটিও সুষম খাবারে পরিণত হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশু, কিশোর, দিনমজুর, ডাক্তার, রিক্সাচালক ইত্যাদি পেশার মানুষের সুষম খাদ্যের পরিমাণ এক হবে না। কারণ এদের একেকজনের দেহে খাদ্যের চাহিদা ও পুষ্টিমান একেক রকম। কে কোন খাদ্য কি পরিমান গ্রহণ করবে সেটা নির্ভর করে তার বয়স ও পেশার উপর। তাই এ বিষয়টি নিয়ে মাথা রেখে আপনাকে সুষম খাদ্য নির্বাচন করতে হবে।
খাদ্য নিরাপত্তা কি ?
যে কোন প্রাণীর পুষ্টি সাধনের জন্য প্রাথমিক প্রয়োজন পর্যাপ্ত খাদ্য। অর্থাৎ প্রেমের চাহিদা মাফিক খাদ্য তথা কুষ্টিয়া উপাদান। দেহের চাহিদা মাফিক খাদ্য বা পুষ্টি উপাদান গ্রহণের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যের যোগান। চাহিদা মাফিক শব্দের যোগানের জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন বা পর্যাপ্ত খাদ্য কেনার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ নগদ টাকা। অর্থনীতির ভাষায়, প্রয়োজনীয় খাদ্য যোগানের নিশ্চয়তাকে বলা হয় খাদ্য নিরাপত্তা।
খাদ্য নিরাপত্তার তাত্ত্বিক অর্থ, শব্দ দুটির আভিধানিক অর্থের মধ্যে নিহিত। যেমন, নিরাপত্তা শব্দের আভিধানিক অর্থ নিরাপদ অবস্থা, নির্বিঘ্নতা, বিপদ শূন্যতা বা সুরক্ষা।তেমনি খাদ্য নিরাপত্তা বলতে খাদ্য নিরাপদ অবস্থা, খাদ্য নির্বিঘ্নতা বা খাদ্যের বিপত্তি শূন্যতা বোঝায়। আরো সহজ অর্থে বলা যায়, একটি পরিবারের সদস্যদের যথাযথ পুষ্টি সাধনের জন্য বছরে যে পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন, কমপক্ষে ততটুকু খাবার সংগ্রহের নিশ্চয়তা থাকাকে সে পরিবারের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা বলা যেতে পারে।
একইভাবে একটি দেশের, জাতির বা জনগোষ্ঠীর পুষ্টি সাধনের জন্য বছরে যে পরিমাণ খাদ্যের প্রয়োজন, সে পরিমাণ খাদ্যের যোগানের নিশ্চয়তা কে সে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বলা হয়। অবশ্য সে খাদ্য হতে হবে সুষম। অর্থাৎ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান কমপক্ষে যতটুকু হলে লোকজনের সুষ্ঠু পুষ্টি সাধন সম্ভব, ঠিক ততটুকু পুষ্টি উপাদান খাদ্যের মধ্যে থাকতে হবে। অন্যথায় খাদ্য সুষম না হওয়ার কারণে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন সম্ভব নয়।
খাদ্যের শ্রেণীবিভাগে শাক সবজির অবস্থান
আমাদের দেশে একটি ভুল ধারণা আমাদেরকে বিপথে পালিত করছে। তা হলো শাক সবজির অবমূল্যায়ন। আমরা সাধারনত শাকসবজিকে নিম্নমানের খাবার হিসেবে বিবেচনা করে থাকি। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। খাদ্য বিজ্ঞান ও পুষ্টিমানের বিবেচনায় শাক সবজি শীর্ষস্থানীয়। শাকসবজি কে বলা হয় রোগ প্রতিরোধক খাবার। ভিটামিন, ধাতব মৌল, খাদ্য আশসহ বহুবিধ অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদানের সর্বোৎকৃষ্ট উৎস হলো শাকসবজি। শাকসবজি কম খাওয়ার কারণে এ দেশে প্রতি বছর প্রায় ত্রিশ হাজার শিশু অন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ৯ লাখ শিশু বিভিন্ন ধরনের চোখের অসুখে ভুগছে।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের মধু খাওয়ার ১৪টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন ।
উল্লেখ করা যায়, মৌসুমী অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ার কারণে আমাদের দেশে শাকসবজি উৎপাদনের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। অজ্ঞতা বশত আমরা আমাদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে অযথা কষ্ট পাচ্ছি। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অন্যদিকে আমাদের খাবারে তেলের পরিমাণ অনুমোদিত পরিমাণ এর চেয়ে অনেক কম। এদেশের খাবার তেলের উচ্চ দাম হয়তো এজন্য দায়ী । কিন্তু খাবারকে সুষম করতে তেল আরও বেশি করে খাওয়া উচিত। উল্লেখ্য যে আমাদের খাবার মূলত শর্করা নির্ভর। যার ফলে খাদ্য সুষম নয়। খাদ্যকে সুষম করতে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে শাকসবজি, প্রাণীজ আমিষ, ডাল ও তেল বেশি করে খাওয়া উচিত।
খাদ্যের পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টি জ্ঞান
খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ করতে হলে আপনাকে খাদ্যের বিভিন্ন পুষ্টি সম্পর্কে শিক্ষা ও জ্ঞান লাভ করতে হবে। পুষ্টি জ্ঞানের প্রধান প্রয়োগ হলো, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত আয় কে খাদ্য অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ হতে সঠিকভাবে পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি সাধনের উদ্দেশ্যে যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করা। যেমন-পরিবারের সদস্যদের চাহিদা অনুসারে উপযুক্ত খাদ্য ও খাদ্য উপাদান নির্বাচন, খাদ্য প্রস্তুত করা, পরিবারে সদস্যদের মধ্যে খাদ্য বন্টন বা পরিবেশন ইত্যাদি।সঙ্গে জড়িত রয়েছে খাদ্যের পুষ্টিমান সম্পর্কিত জ্ঞান , পরিবারের সদস্যদের পুষ্টি চাহিদার জ্ঞান,খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্য সংস্কৃতির জ্ঞান, খাদ্য সংরক্ষণ ও মান নিয়ন্ত্রণ, পরিবারের দুস্থ ও সংবেদনশীল সদস্যদের যত্ন ও পুষ্টিচাহিদা ইত্যাদি সম্পর্কিত জ্ঞান।
অন্যদিকে খাদ্য বিষয়ক পছন্দ ও অপছন্দ, খাদ্যের স্বাদ এর ক্ষেত্রে অবশ্য বিবেচ্য বিষয়। অন্যথায় পরিমান গত দিক থেকে পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকলেও এসব পরিসীমা সঠিক মূল্যায়নের অভাবে যথাযথ সম্ভব নয়। যথাযথ পুষ্টি সাধনের জন্য প্রয়োজন সঠিক খাদ্য, খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ এবং খাদ্য উপাদান সম্পর্কে জানা। এই জ্ঞান কৃষি ও নগদ রোজগেরে উভয় শ্রেণীর পরিবারের জন্য প্রয়োজন। এই দেশে কৃষি ঋতুভিত্তিক। বছরের বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়।বিশেষ করে শাকসবজি ফল উৎপাদনের উপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। শীতকালে শাকসবজির গ্রীষ্মকালের ফলমূলের উৎপাদন বেশি।
ভদ্র আশ্বিন মাসে শাক সবজির উৎপাদন সবচেয়ে কম। আরো উল্লেখ্য যে, এ সময়ে মাছ ও অন্যান্য প্রাণীজ খাবার কম পাওয়া যায়। ফলে এসো একটি কৃষক পরিবারের পক্ষে নিজের উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের উপর নির্ভর করে পরিবারের সদস্যদের জন্য সুষম খাদ্য সংগ্রহ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই সময়ে একটি নগদ রোজগেরে পরিবারের পক্ষে এই একই সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় পুষ্টি জ্ঞানের প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্যকে সুষম করা । খাদ্যকে সুষম করতে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে শাক-সবজি, প্রাণীর আমিষ, ডাল ও তেল বেশি করে খাওয়া উচিত।
কম চর্বিযুক্ত খাবার কোনগুলো
খাদ্য হিসেবে শাক সবজির শ্রেণীবিভাগ
- পাতা জাতীয়।
- ফল জাতীয় ।
- ফুল জাতীয়।
- মূল জাতীয়।
- কন্দ জাতীয়।
- কন্দাকার জাতীয়।
- কাণ্ড জাতীয়।
- পাতা জাতীয়ঃ এদেশের মাটি অনুকূল হওয়ার কারণে সারা বছর প্রচুর শাকসবজি জন্মায় । পাতা জাতীয় সবজি গুলোর মধ্যে রয়েছে- বাঁধাকপি, ডাটা শাক, লাল শাক, নটেশাক, পুই শাক, লেটুস, কচু শাক, মেথি শাক, পালং শাক, কুমড়া শাক, লাউ শাক, রাই শাক, কলমি শাক, গিমা কলমি, আলু শাক, পুদিনা, গাজর পাতা, ঢেঁকি শাক, মেসটা শাক, ধনেপাতা, থানকুনি পাতা, সজিনা পাতা, চিকোরি শাক, সরিষা শাক, পাট শাক, আলমিস, খেসারি পাতা, মাসকলাই শাক, গন্ধ বাদালী পাতা, চুকা পালং, বতুয়া শাক, রাধুনী শাক, কাথা শাক, কাকমাছি শাক, নীম পাতা, পটল শাক, সুসনিশাক, মুলাশাক, তেতুল পাতা, পেঁয়াজ পাতা ইত্যাদি সহ আরো অসংখ্য শাক চাষ করা হয় আমাদের দেশে।
- ফল জাতীয়ঃ ফল জাতীয় সবজিগুলোর মধ্যে টমেটো, বেগুন, কুমড়া, শসা, ক্ষিরা, ঢেঁড়স, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম, লাউ, কাঁচা আম, কাঁচা কলা, লেটুস, বিভিন্ন জাতের শিম, বরবটি, ঝিঙ্গা, ধুন্দুল, উচ্ছে, করলা, পটল, চিচিঙ্গা, পেঁপে, ইচর, ডুমুর, কাঁকরোল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
- ফুল জাতীয়ঃ ফুল জাতীয় শাকসবজিগুলোর মধ্যে ফুলকপি, সজিনা ফুল, কুমড়া ফুল, বকফুল, কচুর ফুল, মেসটা ফুল, ব্রকলি, কলার মোচা, বাঁধাকপি ইত্যাদির উৎপাদন অধিক।
- মূল জাতীয়ঃ শাকসবজির শ্রেণীবিভাগ করতে গিয়ে মূল জাতীয় শাকসবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে-গাজর, মুলা, কচু, বিট, পারসনিপ, শালগম, ওলকপি, হাতিখুরা, শাকালু, মেটে আলু, বিভিন্ন জাতের কচু, কচুর লতি, বাঁশের অংকুর।
- কন্দ জাতীয়ঃ কন্দ জাতীয় শাকসবজি গুলো হলো-গোল আলু, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
- কন্দাকার জাতীয়ঃ শাকসবজির শ্রেণীবিভাগে কন্দাকার জাতীয় শাকসবজি গুলোর মধ্যে রয়েছে- পেঁয়াজ, রসুন, পেঁয়াজের কলি ইত্যাদি।
- কাণ্ড জাতীয়ঃ শাকসবজির মধ্যে বেশ কিছু কাণ্ড জাতীয় সবজি পাওয়া যায়, যেগুলোতে গাছের কাণ্ডকে সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। সেসব সবজিগুলো হলো-ডাটা, কলা গাছের কান্ড, শতমূলী, সেলারী, শাপলা, পান কচু, টোয়াস, কচিবেত ইত্যাদি।
দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ
খাদ্যের পরিমাণ নির্ভর করে পুষ্টি উপাদানের চাহিদার উপর। এ পরিমাণ নির্ভর করে দেহের চাহিদার উপর। আমাদের একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, একটি পরিবারের বিভিন্ন বয়সের এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করতে পারে, কিন্তু আমাদের সকলের দেহে খাদ্য চাহিদা একরকম নয়। পরিবারের সব সদস্যদের মধ্যে শিশু এবং গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী মায়েদের পুষ্টি চাহিদা তুলনামূলকভাবে বেশি। আবার বাসায় যারা বয়স্ক মানুষ আছে তাদেরকেও পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। খাদ্য পরিবেশন এবং বন্টনের সময় এ বিষয় স্মরণ রাখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ দেশীয় ১৫টি ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
খাদ্যকে সুষম করতে হলে, খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ মোতাবেক আমাদের খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এজন্য খাদ্যকে সুষম করার তাগিদে আমাদের দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য শ্রেণীবিভাগ মোতাবেক খাবার খাওয়া জরুরী। দেহের চাহিদা অনুযায়ী খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে তিনটি শ্রেণীতে। যথা-
- শরীরে শক্তি দানকারী খাবার।
- শরীর বৃদ্ধি কারী ও ক্ষয় পূরণকারী খাবার।
- রোগ প্রতিরোধকারী খাবার।
- শরীরে শক্তি দানকারী খাবারঃ যেসব খাদ্য খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি হয় সেসব খাবার কে শরীরের শক্তি দানকারী খাবার বলে বিবেচনা করা হয়েছে। শরীরের শক্তিদানকারী খাবার গুলো হলঃ চিনি, মধু, চাল, গম, গুড়, ভুট্টা, সয়াবিন, তিল, বাদাম ইত্যাদি।
- শরীর বৃদ্ধি কারী ও ক্ষয় পূরণকারী খাবারঃ যে সকল খাবার খেলে শরীরের বৃদ্ধি সাধিত হয় এবং দেহের ক্ষয় পূরণ করে সে সকল খাবার কে শরীর বৃদ্ধি কারী ও ক্ষয় পূরণকারী খাবার বলা হয়। শরীর বৃদ্ধিকারী ও ক্ষয় পূরণকারী খাবার গুলো হলোঃ মায়ের দুধ, গরুর দুধ, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, ছোলার ডাল, খাসির মাংস, মাশকলায়ের ডাল, মুগ ডাল, মাছ, ডিম ইত্যাদি।
- রোগ প্রতিরোধকারী খাবারঃ যেসব খাবার খেলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দেহকে বিভিন্ন রোগবালাই থেকে দূরে রাখে তাদেরকে রোগ প্রতিরোধকারী খাবার বলা হয়। রোগ প্রতিরোধকারী খাবার গুলো হলোঃ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, পানি, খাদ্য আঁশ ইত্যাদি।
খাদ্যের শ্রেণীবিভাগ কেন করা হয় ?
- শস্যজাতীয় খাবার।
- প্রাণীজ খাবার ।
- উদ্ভিজ্জ খাবার ।
- শক্তিদায়ক।
- শরীর বৃদ্ধিকারক ও ক্ষয়পূরক।
- রোগপ্রতিরোধক।
- শক্তি দায়ক---শর্করা ও তেল---খাদ্যশস্য, আলু ও তৈলবীজ।
- শরীর বৃদ্ধিকারক ও ক্ষয়পূরক---আমিষ---মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ডাল, বিচি।
- রোগ প্রতিরোধক---ভিটামিন, লবণ, পানি---শাকসবজি ও ফলমূল সহ সব ধরনের খাবার।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url