প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সম্পর্কে চমৎকার তথ্যগুলো জেনে নিন
পোস্ট সূচীপত্রঃ প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সম্পর্কে চমৎকার তথ্যগুলো জানুন
- প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সম্পর্কে কিছু কথা ।
- সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিচিতি ও ভৌগলিক অবস্থান ।
- সেন্টমার্টিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকা ।
- সেন্টমার্টিনের অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা ।
- প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ।
- স্থানীয়রা সেন্টমার্টিনকে 'নারিকেল জিঞ্জিরা' বলে কেন ।
- সেন্টমার্টিনকে প্রবাল দ্বীপ বলার কারণ ।
- পর্যটন কেন্দ্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ।
- সেন্টমার্টিনে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ।
- সেন্টমার্টিন দ্বীপের আবহাওয়া ও জলবায়ু ।
- প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনা।
- লেখকের শেষ কথা । প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সম্পর্কে চমৎকার তথ্যগুলো।
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন সম্পর্কে কিছু কথা
বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভূমি । একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন তার সৌন্দর্যকে আর আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরেছে বিশ্বের বুকে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের অসংখ্য দ্বীপের ভিড়ে তাই সেন্ট মার্টিন আপন রূপ ঐশ্বর্য অনন্য একটি স্থান দখল করে আছে। সেন্ট মার্টিনের সাগরের জল তরঙ্গের সাথে গাছ গাছালির সবুজের সমারোহ অপরূপ মিতালী তৈরি করে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ কে করেছে আরো বেশি মোহনীয়, আকর্ষণীয়, সতেজ ও সজীব।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের বর্ণনা সম্পর্কে জেনে নিন
যা শুধু বাংলাদেশের মানুষকে আকৃষ্ট করে না সারা বিশ্বের মানুষকে আকৃষ্ট করে। তাইতো পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন পর্যটকরা আসে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে কিছু সময় শান্তির খোঁজে । এই দ্বীপে বেড়াতে এসে মানুষ যেন হারিয়ে যায় অন্য জগতে। প্রবালদীপ সেন্ট মার্টিনের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ ছুটে আসে। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে সেন্ট মার্টিন হয়ে উঠতে পারে পৃথিবীর অন্যতম প্রধান একটি পর্যটন কেন্দ্র।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিচিতি ও ভৌগলিক অবস্থান
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার আঁধার সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের ইউনিয়ন হিসেবে সেন্ট মার্টিন বিশেষভাবে পরিচিত। বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে ভেসে ওঠা এই প্রবাল দ্বীপ নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত যা টেকনাফ থেকে ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থানরত। ব্রিটিশ শাসনামলে এ দ্বীপের নামকরণ করা হয় সেন্টমার্টিন। স্থানীয় জনগণের কাছে এটি 'নারিকেল জিঞ্জিরা' নামে পরিচিত। সেন্ট মার্টিন এর অন্তর্গত ছেঁড়া দ্বীপ নামে আরও একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ আছে যা প্রবল জোয়ারের কারণে প্রায়ই মূলদ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সেন্টমার্টিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকা
প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন পর্যটকদের নিকট মনোরম ও আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। যদিও পর্যটকরা এই সৌন্দর্যমন্ডিত দ্বীপে বেড়াতে এসে অনেক আনন্দ উপভোগ করে। কিন্তু এই দ্বীপে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মান তেমন ভালো নয়। এই দ্বীপে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেক কষ্ট করে জীবন যাপন করতে হয় এবং জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় অধিবাসীগন প্রধানত মৎস্যজীবী। তারা বিভিন্নভাবে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। সাগরে মাছ শিকার করার পর তারা স্থানীয় বাজার ও টেকনাফ কক্সবাজারে বিক্রি করে।
এই মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে তারা তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে জীবন যাপন করে। জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য অধিকাংশ উপাদানই তাদের টেকনাফ থেকে আমদানি করতে হয়। প্রায় সময়ই প্রবল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে বসবাসকারী অধিবাসীগণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় প্রভৃতির কবলে পড়েন এবং তাদের বাড়িঘর ব্যবহার্য জিনিসপত্র সবকিছুই লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এভাবেই তাদের প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করেও বেঁচে থাকতে হয়। অনেক সময় এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবল তাণ্ডবে সর্বশান্ত ও নিঃস্ব হয়ে পড়ে সেন্ট মার্টিনে বসবাসরত বাসিন্দা গণ। এজন্য সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দাগণের জীবন চালনা ও জীবিকা নির্বাহ অনেক কঠিন।
সেন্টমার্টিনের অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা
সেন্টমার্টিন এর অর্থনীতি মূলত মৎস্যকেন্দ্রিক। এই দ্বীপের অধিকাংশ লোকের পেশা হচ্ছে মাছ ধরা। এই দ্বীপের অধিকাংশ লোক মাছ ধরায় অনেক পারদর্শী এবং এটাকেই তাদের পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। যেহেতু তাদের বেশিরভাগই মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত তাই এই সূত্রে তাদের সমাজ প্রধানত জেলে সমাজ। কিছু লোক আবার সমুদ্র তল থেকে শৈবাল ও ঝিনুক সংগ্রহ করে তা পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারে রপ্তানি করে টাকা উপার্জন করে। প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে বসবাসকারী অধিবাসীগণ জেলে সমাজের অন্তর্গত হলেও সাম্প্রতিক সময়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে একটি ব্যবসায়ী শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছে।
অনেকেই এখন পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত। তারা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করার মাধ্যমে অর্থ আয় করে থাকে। এখন এটাকেও তারা জীবিকা নির্বাহের একটি পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে । সেন্ট মার্টিন এর অর্থনীতির আরেকটি উপাদান হচ্ছে নারিকেল। সম্পূর্ণ দ্বীপ জুড়ে রয়েছে প্রচুর নারিকেল গাছ। যার চোখ জুড়ানো সৌন্দর্যে মানুষ বিভোর হয়ে যায়। এসব নারিকেল তারা আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায়ও সরবরাহ করে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার প্রধান হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুরো সেন্টমার্টিনের সমাজপতি। তিনি তার সহযোগীদের সাথে নিয়ে দ্বীপবাসীর দেখাশোনা করেন এবং বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য
অপরূপ সৌন্দর্যে লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। আর আমাদের এই দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সেন্ট মার্টিন যেন আপন রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলেছে চোখ ধাঁধানো অপরূপ সৌন্দর্যে। প্রকৃতি নিজের মতো করে সেন্ট মার্টিন কে রাঙিয়ে তুলেছে ভিন্ন ভিন্ন রংয়ের বাহারি সংমিশ্রণে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশের মধ্যে সেন্ট মার্টিন উজ্জ্বল এক সৌন্দর্য ভান্ডার।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জানুন
সমুদ্রের উচু নিচু জলতরঙ্গের বুকে সবুজের চিরায়ত সামারোহ গায়ে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি। নীল জলরাশি বেষ্টিত ১ খন্ড সবুজ ভূখণ্ড মুহূর্তে মনে করিয়ে দেয় অপার সৌন্দর্যময়ী বাংলাদেশের কথা। সৈকতের শামুক-ঝিনুক, স্বচ্ছ পানির নিচে রকমারি শৈবাল এবং সাগর তীরের ঝাউগাছ মিলে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন যেন এক স্বর্গপুরি। এত আকর্ষণীয় মুগ্ধকর চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য একবার দেখলে মনে হবে বারবার দেখে। তাইতো এই সেন্টমার্টিন দ্বীপটি দেশে বিদেশে সকলের কাছে অনেক পছন্দের এবং আনন্দ ভোগের জায়গা।
স্থানীয়রা সেন্টমার্টিনকে 'নারিকেল জিঞ্জিরা' বলে কেন
'নারিকেল জিঞ্জিরা' বলে অভিহিত করে স্থানীয় জনগণ এই প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে। সেন্ট মার্টিন কে 'নারিকেল জিঞ্জিরা' বলার কারণ হচ্ছে এই সুন্দর দ্বীপের সৌন্দর্য বাড়াতে এখানে দাঁড়িয়ে আছে সারি সারি নারিকেল গাছ। সম্ভবত মাছ ধরার সময় বাঙালি জেলেরা তাদের তৃষ্ণা মেটাতে এবং তাদের পরিশ্রান্ত শরীরকে তৎক্ষনাৎ চাঙা করার জন্য এসব নারিকেল গাছ সেন্টমার্টিন দ্বীপে লাগান।
যেটা ধীরে ধীরে সময়ের ব্যবধানে আজ অসংখ্য নারিকেল গাছ দাঁড়িয়ে আছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এই দ্বীপটি ধীরে ধীরে নারিকেল গাছ প্রধান দ্বীপে পরিণত হয়ে যায়। তাই সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা গন এই দ্বীপটির উত্তর অংশকে অভিহিত করেন 'নারিকেল জিঞ্জিরা' বলে । এক সময় ঝাউ গাছ ও কেয়া গাছ ছিল এই পুরো দ্বীপ জুড়ে। এখন এই নারিকেল গাছগুলো মানুষের তৃষ্ণা মিটানোর পাশাপাশি দ্বীপটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে এবং পর্যটকদের নিকট আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
সেন্টমার্টিনকে প্রবাল দ্বীপ বলার কারণ
অসম্ভব সুন্দর একটি দ্বীপ সেন্টমার্টিন। বাংলাদেশে একটি মাত্র প্রবাল দ্বীপ আছে সেটা হচ্ছে সেন্টমার্টিন, যা ভূখণ্ডের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। এটি কক্সবাজার জেলা থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ১৭ বর্গ কিলোমিটারের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ। এই অপূর্ব সৌন্দর্যমন্ডিত দ্বীপটিকে প্রবাল দ্বীপ বলার কারণ আজকে আমরা জানবো। আপনি জেনে অবাক হবেন যে প্রবাল কোন পাথর নয়।
প্রবাল একটি মেরুদন্ডহীন অর্থাৎ অমেরুদন্ডী প্রাণী। যার বাহ্যিক আবরণ পাথরের মত অনেক শক্ত হওয়ায় একে পাথর বলে মনে করা হয়। প্রবাল পলিপ নামক অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণি একসাথে সম্মিলিত হয়ে গঠিত হয়। যেসব দ্বীপ প্রবাল পাথরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে সেসব দ্বীপকে প্রবাল দ্বীপ বলা হয়। সেন্ট মার্টিন দ্বীপটি প্রবাল পাথরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে তাই সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্রবাল দ্বীপ বলা হয়।
পর্যটন কেন্দ্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন
পর্যটন শিল্পের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে বহুল সমাদৃত । বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্র গুলোর মধ্যে সেন্ট মার্টিন এর নাম সবার আগে চলে আসে। কারণ সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এতটাই সুশোভিত ও সৌন্দর্যমন্ডিত যে দেশ-বিদেশের যে কোন মানুষকে মুগ্ধ করে দেয় এ সেন্টমার্টিন। প্রতিবছর হাজার হাজার দেশী ও বিদেশী পর্যটকের পদচারনায় মুখরিত থাকে সেন্টমার্টিনের সৈকত। এখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উভয়ই উপভোগ করা যায়। আয়তনে ছোট হওয়ায় ইচ্ছা করলে পায়ে হেঁটে পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখা যায়।
যার ফলে এই দ্বীপের প্রত্যেকটা সৌন্দর্য নিজের পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ী উপভোগ করা যায়। সমুদ্র তীরে রাতের চাঁদের আলোয় 'নারিকেল জিঞ্জিরা' এক অলৌকিক ভালো লাগার জন্ম দেয়। স্পিড বোটে চড়ে দ্বীপের চতুর্দিকে ঘুরে বেড়ানো পর্যটকদের কাছে বেশ রোমাঞ্চকর ব্যাপার। এক কথায় যারা সত্যিকার অর্থে আধুনিক ব্যস্ততাকে এড়িয়ে প্রকৃতির একটু শীতল পরশ পেতে চাই তাদের জন্য সেন্ট মার্টিনের বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দলে দলে পর্যটকরা ভিড় জমায়।
সেন্টমার্টিনে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা
আরো পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু সেতু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিন
কাঁচা রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটেই মূলত দ্বীপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে হয়। তবে কিছু ভ্যান গাড়ি যাতায়াত সেবা দিয়ে থাকে। পুরো দ্বীপে বিদ্যুৎ না থাকলেও জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে।সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাথে বাংলাদেশের কোন টেলিফোন সংযোগ নেই। কিন্তু সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের আবহাওয়া ও জলবায়ু
সমুদ্রের ভেতরে অবস্থানের কারণে বিভিন্ন সময় সেন্ট মার্টিন দ্বীপের আবহাওয়া ও জলবায়ুর অবস্থা বিভিন্ন রূপ ধারণ করে । সাধারণত নভেম্বর মাস থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ের আবহাওয়া সবচেয়ে ভালো থাকে। এ কারণে এই সময়টাকে বলা হয় 'পর্যটন মৌসুম'। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই পর্যটন মৌসুমে সেন্ট মার্টিনে বেড়াতে এসে আপনি বেশি আনন্দিত হবেন এবং আরামদায়কভাবে উপভোগ করতে পারবেন।
এই সময় দেশী বিদেশী পর্যটকদের আগমন ঘটে সবচেয়ে বেশি। শীতকালে সাগর অনেকটা শান্ত থাকে বিধায় পর্যটকেরা এ সময় নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। কিন্তু বর্ষাকাল আসলে শুরু হয় আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ। এ সময় সাগর উত্তল হয় বহু গুনে। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে ঝড় ও ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই সময় পর্যটকদের তেমন আনাগোনা থাকে না।
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনা
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। কারণ সুজলা সুফলা, শস্য শ্যামলা এ দেশকে যেন বিধাতা আপন হাতে সমস্ত সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছেন। এদেশে ছোট বড় অসংখ্য প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক, নৈসর্গিক, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সহ বিচিত্র সব মনোরম স্থান রয়েছে। তার মধ্যে সেন্টমার্টিন হচ্ছে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে লীলাভূমি। যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করতে পারলে এ দ্বীপ বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে যে সাফল্যের শিখরে নিয়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এজন্য সরকারিভাবে অবকাঠামগত উন্নয়ন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
পর্যটন শিল্পে সেন্টমার্টিনের অবস্থান দৃঢ় করার জন্য প্রয়োজন স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা জোরদার করতে পারলে পর্যটকের সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কিছু সুযোগ-সুবিধা চালু করতে হবে। আর এই সেবা দানের জন্য গড়ে তোলা দরকার দক্ষ কর্মী বাহিনী। পর্যটন সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আকর্ষণীয় প্রচারের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে সেন্ট মার্টিন এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া গেলে বৃহদার্থে দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সামনে তাই পড়ে আছে পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপার সম্ভাবনা।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url