ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়মদেশীয় ফল আমাদের কমবেশি সকলেরই অনেক পছন্দের। আপনিও নিশ্চয়ই দেশীয় ফল গুলো অনেক পছন্দ করেন। এজন্য আপনি যদি দেশীয় ফলগুলো সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে। আজকের আর্টিকেলে দেশীয় ১৫ টি ফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
দেশীয় ফলগুলো সম্পর্কে জানা আপনার জন্য অনেক জরুরী। আজকের আর্টিকেলে যেসব দেশীয় ১৫ টি ফল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে সেসব দেশীয় ফল অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। এই দেশীয় ১৫ টি ফল আপনার শরীরে অনেক উন্নতি সাধন করতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক দেশীয় ১৫ টি ফল সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের দেশীয় ১৫টি ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
বাংলাদেশের দেশীয় ফল গুলো কি কি ?
দেশীয় ফল বলতে যেসব ফল আমাদের দেশে জন্মায় বা আমাদের দেশে যেসব ফল উৎপাদন করা যায় সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। বাংলাদেশ শস্য শ্যামল দেশ। এদেশের মাটি অনেক উর্বর। এদেশের মাটিতে বিভিন্ন রকম সুস্বাদু, মিষ্টি জাতীয় ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন রকম দেশীয় ফল চাষ করা হয় এবং খুব সহজেই আমরা দেশীয় ফলগুলো পেয়ে থাকি। আবার দেশীয় ফলগুলো একেক জেলায় একেকটা ফল বিখ্যাত। দেশীয় ফল গুলোর মধ্যে অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন কয়েকটি ফলের নাম নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- কাঁঠাল
- আম
- লিচু
- কলা
- পেঁপে
- পেয়ারা
- ডাব
- আঁখ
- আনারস
- কমলা
- খেজুর
- জাম
- সফেদা
- কামরাঙ্গা
- ডালিম
বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল
কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠাল মা ও শিশুর যাবতীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কাঁঠাল অতি সুস্বাদু, রসালো, পুষ্টিকর ও জনপ্রিয় ফল। কাঁঠালের অনেক পুষ্টিগুণ আছে। কাঁঠালের পুষ্টিগুণের মধ্যে অন্যতম হলো এই ফলে মা ও শিশুর দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও ভিটামিন বিদ্যমান। এই ফলমায়ের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য এবং শিশুর বিকাশ লাভ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে মায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং শিশুর বৃদ্ধির জন্য যেসব ভিটামিন প্রয়োজন যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, শর্করা, চর্বি ইত্যাদি সবকিছুই তাজা পাকা কাঁঠালে বিদ্যমান।
মাত্র ২০ গ্রাম কাঁঠাল অথবা ১ থেকে ২গ্রাম তাজা কাঁঠালের রস শিশুর প্রয়োজনীয় ভিটামিন এর অভাব পূরণ করতে পারে। আমাদের দেশে কাঁঠাল শুধু পাকা খায় তা নয় কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খেতেও অনেক সুস্বাদু লাগে এবং যথেষ্ট পুষ্টিকর। আমাদের দেশের প্রধানত প্রাপ্তবয়স্করা এ ফল খেয়ে থাকেন।আমাদের দুর্ভাগ্য যে, শিশুদের অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এই সুস্বাদু পুষ্টিকর খাবারটি খাওয়ানোর অভ্যাস এখনো গড়ে তুলতে পারিনি। যার কারণে তারা বঞ্চিত হচ্ছে কাঁঠালের পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও ভিটামিন থাকে। তাই এ জাতীয় ফল কাঁঠাল বড়দের পাশাপাশি শিশুদের খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
দেশীয় ফল কাঁচা আমের গুণাগুণ
আম বাংলাদেশের অনেক জনপ্রিয়, সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন একটি দেশীয় ফল। কাঁচা আম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অনেক ক্ষেত্রে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের গুণাগুণ অনেক বেশি। কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই কিন্তু জানেন না। আজকে কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জেনে সত্যি অবাক হয়ে যাবেন। কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে নিচে ব্যাপক আলোচনা করা হলোঃ
- কাঁচা আম শরীরের রক্ত পরিষ্কার রাখে।
- কাঁচা আম স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
- ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- বিটা ক্যারোটিন থাকায় হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে আপনাকে খুব সাহায্য করবে এই কাঁচা আম।
- পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করবে কাঁচা আম।
- কাঁচা আমের প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকাই রক্তস্বল্পতা সমস্যা সমাধানে বড়ই উপকারী।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় গরমে ঠান্ডা জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করবে।
- কিডনির সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করবে।
- কাঁচা আম লিভার সুস্থ রাখে।
- নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করে কাঁচা আম।
- কাঁচা আম এসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করবে।
- ত্বক উজ্জল ও মলিন করবে এই কাঁচা।
- দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করবে।
- ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।
- এছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে কাঁচা আম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গ্রীষ্ম ঋতুতে কাঁচা আম পাওয়া যায়। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। এমনকি পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে থাকে। বেশি বেশি কাঁচা অ্যাম খেয়ে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন।
পাকা আমের গুণাগুণ সম্পর্কে
বাজারে পাকা আম পাওয়া যায়। পুষ্টিগুনে ভরা এই আমে আছে প্রচুর ক্যারোটিন। এই ক্যারোটিন মানুষের ত্বকের মসৃণতা বাড়ায়। সৌন্দর্য বাড়াতে আমের জুড়ি নেই। চুলের রুক্ষতা কমায় পাকা আম। সাধারণত অন্যান্য ফলের এই বিশেষ গুণটি কম থাকে। প্রতি ১০০গ্রাম পাকা আমে আছে আন্তর্জাতিক এককে২৫০০-৮০০০ ক্যারোটিন।
জলীয় অংশ থাকে ৭৫-৮৫ ভাগ। শর্করা১৪ ভাগ, ফলিক এসিড চার ভাগ, অ্যালকোহল থাকে দুই ভাগ, ভিটামিন সি ১৭৫ গ্রাম । আমের জলীয় অংশ মানুষের দেহের খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দিতেও সাহায্য করে। মানুষের শরীরের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে সাহায্য করে আম। আম ঔষধিগুনেও ভরপুর। যকৃত ভালো রাখতে আম হতে পারে উৎকৃষ্ট ফল। কখনো কখনো ডায়রিয়া রোগের ওষুধ এই আম। তাই মৌসুম শেষ হওয়ার আগে যত খুশি আম খেয়ে নিন।
কলা একটি সুস্বাদু দেশীয় ফল
আমাদের সবার প্রিয় এবং বিভিন্ন গুণাগুনে সমৃদ্ধ আরো একটি ফল কলা। কলা অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। কলা শক্তিমান টিস্যু দানকারী উপাদান, আমিষ, ভিটামিন ও মিনারেল এর এক অতি উৎকৃষ্ট সমন্বয়। কলা ক্যালোরির একটি ভালো উৎস যাতে কঠিন খাদ্য উপাদান এবং সেই সাথে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয়ে যেকোন ফ্রেশ ফলের তুলনায় বেশি।
একটি বড় কলায় ১০০ এর বেশি ক্যালরি থাকে। এছাড়াও কলাতে সহজে হজম-যোগ্য চিনি আছে। যা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে এবং ক্লান্তি দূর করতে কলার ভালো ভূমিকা রয়েছে।শুধু পাকা কলা নয় কাঁচা কলাও অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। কাঁচা কলাও আপনি সবজি হিসেবে রান্না করে খেতে পারেন। কলার বিভিন্ন গুনাগুন সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- কলা দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়া গেলে তা থেকে প্রায় পুরোপুরি ব্যালেন্স ডায়েট পাওয়া যায়।
- কলা নিরাপদ হজমের জন্য তথ্য হিসেবে কাজ করে।
- কলা নরম হবার কারণে হজম শক্তির কাজে বাড়তি ঝামেলা দেখা দেয় না।
- দীর্ঘকাল স্থায়ী আলসার রোগের ক্ষেত্রেও কোন সমস্যা ছাড়াই কলা খাওয়া যায়।
- এটা অতিরিক্ত এসিডিটিকে প্রতিরোধ করে, এছাড়া এটি পাকস্থলীর আস্তরণের উপর একটি আবরণ সৃষ্টি করে আলসারের উত্তেজনাকে প্রশমন করে।
- কলাতে উচ্চ পরিমাণ আয়রন থাকাতে তা অ্যানিমিয়া চিকিৎসার জন্য উপকারী। কারণ তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
- কলা ও দুধের মিশ্রণ ওজন কমাতে সাহায্য করে। ১৫ থেকে ২০ দিন প্রতিদিন 6 টি কলা এবং ৪ গ্লাস দুধ খাওয়া যেতে পারে।
দেশীয় ফল ডাব ও দেশীয় ফল আখ সম্পর্কে তথ্য
ডাব সর্বপ্রথমে একটি জীবাণুমুক্ত বিশুদ্ধ পানি। এতে আছে প্রচুর পটাশিয়াম তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য এটি নিরাপদ। কারণ দৈনন্দিন সাধারণ খাবার লবণ সোডিয়াম ক্লোরাইড, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়া ছোট শিশুদের ডায়রিয়া, কলেরা প্রতিরোধ করে তাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পানির অভাব পূরণ করে এবং স্যালাইনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। হাঁপানি রোগীর জন্য ডাবের পানি নিরাপদ ও উপকারী।
আখে রয়েছে সুক্রোজ, যা শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে। তাই সুস্থ শরীরে এর রস পান করলে তাড়াতাড়ি শক্তি পাওয়া যায়। এটি জন্ডিসের ভীষণ উপকারী। তবে আখের রসের চেয়ে ৩০ গুন বেশি কুষ্টিয়া আছে আখের গুড়ে। এতে আরো আছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি এবং আয়রন। ম্যাগনেসিয়াম খনিজ লবণ থাকাতে এটি হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে উপকারী। তবে ইদানিং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বিষাক্ত হাইড্রোজ মিশ্রিত করে গুড় বিক্রয় করছে বিধায় সরাসরি আখ খাওয়ায় উত্তম।
দেশীয় ফল হিসেবে আনারস
আনারস কৃমিনাশক। কৃমি দূর করার জন্য খালি পেটে (সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে) আনারস খাওয়া উচিত। দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলের শিরা-ধমনীর (রক্ত বাহিনালি) দেয়ালে রক্ত না জমার জন্য সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত যেতে পারে। হৃদপিণ্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃৎপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা দেহের কাটা, ছেঁড়া, ইনফেকশনজনিত সমস্যা দূর করে।
জিহবা, তালু, দাঁত, মাড়ির যেকোনো অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আনারস। দাঁতের অপারেশনের পর আনারসের রস শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এতে রয়েছে খনিজ লবণ ও ম্যাঙ্গানিজ , যা দাঁত , হাড়, চুলকে করে শক্তিশালী। গবেষণা করে দেখা গেছে যে, নিয়মিত আনারস খান এমন ব্যক্তিদের ঠান্ডা লাগা, গলা ব্যথা, সাইনোসাইটিস-জাতীয় অসুখগুলো কম হয়। এ ফলে রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, যা আমাদের শক্তি যোগায়। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এ ফলটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে বাঁচায়। তবে আনারস টাটকা খাওয়ায় ভালো। আর আনারস খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে বা পরে দুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
দেশীয় ফল হিসেবে পেঁপের পুষ্টিগুণ
সুস্বাদু গ্রীষ্মকালীন ফল পেঁপে হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায় ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। । বিষয়টি নিয়ে গবেষণার পর করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষার্থী এমনটাই দাবি করেছেন। পেঁপে অত্যন্ত সুস্বাদু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। পাকা পেঁপে যেমন আপনার শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে তেমনি কাঁচা পেঁপে আপনার শরীরে অনেক উপকারিতা বয়ে আনবে। পেট ভালো ও ঠান্ডা রাখতে পেঁপে খাওয়ার জুড়ি নেই। তাই নিয়মিত পেপে খান এবং শরীর সুস্থ রাখুন।
কাঁচা পেঁপে অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। প্রতিদিন দুপুরে ও রাতে খাবার পর এক টুকরা কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয় এবং অম্বল ও বদ হজমের কষ্ট দূর হয়। যেসব মহিলা সদ্য সন্তান হয়েছে তারা কাঁচা পেঁপের তরকারি নিয়মিত খেলে স্তনের দুধ বাড়বে। কাঁচা পেঁপের বীজ কৃমিনাশক। আবার পেঁপের পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি চায়ের মত তৈরি করে খেলে হৃদরোগের উপকার হয়। কাজেই বোঝাই যাচ্ছে পেঁপে আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী ফল।
পেয়ারা একটি সুস্বাদু দেশীয় ফল
বিশ্ব মৌসুমী আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে পেয়ারা হয়। পিয়ারা অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে সম্পন্ন একটি দেশীয় ফল। দেশীয় ছোট ধরনের পেয়ারার পাশাপাশি রয়েছে চাষ করা কাজী পেয়ারা। ডাস আকৃতির একেকটা পেয়ারা খেলে পেট ভরে যাবে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারাতে রয়েছে ২১২ কিলোগ্রাম ভিটামিন সি। ০.৯ গ্রাম প্রোটিন, ৫.২ গ্রাম তন্তু জাতীয় উপাদান। পেয়ারা খেলে জীহবা পরিষ্কার হয়, দাঁতের গোড়া শক্ত হয়, মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়। মুখের রুচি বাড়ে । পেয়ারাতে অনেক বেশি ভিটামিন সি থাকায় ত্বক ও চুল ভালো থাকে। পেয়ারার জ্যাম ও জেলিও তৈরি করা যায়।
জাম অন্যতম একটি দেশীয় ফল
উচ্চ মাত্রার ভিটামিন-এ তে ভরপুর জাম আমাদের রক্ত পরিষ্কার করে, দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। ফলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করে। চোখে ইনফেকশন জনিত সমস্যা ও সংক্রামক ছোঁয়াচে) রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। রাতকানা রোগ ও চোখের ছানি অপারেশন হয়েছে এমন রোগীর জন্য জাম ভীষণ উপকারী। জামে গার্লিক অ্যাসিড, ট্যানিস নামে এক ধরনের উপকরণ রয়েছে, যা ডায়রিয়া ভালো করতে সাহায্য করে। তাই জাম খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
দেশীয় সুস্বাদু ফল লিচু
লিচু অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল। বাংলাদেশের প্রায় বেশিরভাগ জেলায় লিচু উৎপাদন হয়। লিচু একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। লিচু শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি ফল। সারা দেশের মধ্যে দিনাজপুরের লিচু খেতে অনেক সুস্বাদু। লিচুর উপরের অংশ অমসৃন ও খসখসে আর গাঢ় গোলাপি রঙের এবং ভিতরের অংশ সাদা রঙের ও রসালো। গ্রীষ্মকালের শেষের দিকে এবং আষাঢ় মাসের শুরুর দিকে বাজারে লিচু পাওয়া যায়।
লিচুর বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে যেমন মাদ্রাজি লিচু, বেদানার লিচু, বোম্বাই লিচু, কাঁঠালি লিচু, চায়না লিচু প্রভৃতি। লিচু অনেক সুস্বাদু একটি ফল এটা আমরা সবাই জানি। সব জেলার লিচুই মোটামুটি খেতে ভালো হয়। তবে দিনাজপুরের লিচু খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু ও রসালো। লিচুতে বিভিন্ন রকম পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন রয়েছে। সিজিনাল ও দেশীয় ফল হিসেবে লিচু খাওয়া সবার জন্যই ভালো। তবে লিচু খাওয়ার পর কারো যদি অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে তাহলে সেই লিচু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে।
সফেদা ফলের গুনাগুন সম্পর্কে
ফটো দা ফল বড় উপবৃত্তাকার 'বেরি' জাতীয়। এর ব্যাস ৪-৮ সেমি হয়। দেখতে অনেকটা মসৃণ আলুর মতো। সফেদা ফলের ভেতরে ২-৫ টী বীজ থাকে। ভেতরের সাস হালকা হলুদ থেকে মেটে বাদামী রঙের হয়। বীজ কালো হয়। সফেদা ফলে খুব বেশি কষ থাকে। এটি গাছ থেকে না পারলে সহজে পাকেনা। পেড়ে ঘরে রেখে দিলে পেকে নরম ও খাবার উপযোগী হয়। সফেদা ফল বেশ মিষ্টি। সফেদা ফল কাঁচা অবস্থায় শক্ত এবং স্যাপোনিন সমৃদ্ধ । সফেদা গাছ উষ্ণ ও ক্রান্তীয় অঞ্চল ছাড় বাঁচে না। শীতল আবহাওয়া সহজেই মরে যায় এই সফেদা ফলের গাছ। সফেদার গাছে ফল আসতে ৫-৮ বছর সময় লাগে। এতে বছরে দুইবার ফল আসতে পারে যদিও গাছে সারা বছর কিছু কিছু ফুল থাকে। সফেদা ফল অত্যন্ত সুস্বাদু একটি দেশীয় ফল।
ডালিম ফল সম্পর্কে আলোচনা
যারা ডায়েট কন্ট্রোল করেন তাদের জন্য ডালিম হতে পারে নিরাময় উৎস। ডালিম খেলে ক্ষুধার অনুভুতি কমে। ক্ষুধার জ্বালা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসে। সাম্প্রতিক গবেষণায় এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গবেষকরা জানান , নিয়মিত ডালিম বা তার উপাদান খেলে ক্ষুধা কম লাগে। খাবারের চাহিদা হাস পাবে। প্রসঙ্গত, এর আগে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে ডালিমে রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, তিন সপ্তাহ নিয়মিত ডালিম খেলে অন্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ক্ষুধা লাগে। গবেষণার নমুনায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত ডালিমের উপাদান গ্রহণ করেছে তারা সামনে থাকা ভাতের প্লেটের ঘরে বাইশ শতাংশ খেয়েছে। আবার ডালিম অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাবার। ডালিমের বিভিন্ন ভিটামিনের পাশাপাশি আয়রন রয়েছে। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রক্তস্বল্পতাও দূর করবে। তাই ডালিম ফল আমাদের শরীরের জন্য উপকারী একটি ফল।
দেশীয় ফল কামড়াঙ্গার উপকারিতা
বাড়ির আনাচে কানাচে গজে ওঠা গাছ কামরাঙ্গা। সবুজ ও হলুদের মিশ্রণে বাহারি এই সুন্দর ফলটির আমাদের সবার কাছে অনেক বেশি প্রিয়। । গ্রীষ্মের সময়ে ফলটি বাজারেও বেশ সহজলভ্য। অন্যান্য ফলের তুলনায় এর দামও কম। আবার খেতেও অনেক সুস্বাদু। পাকা কামরাঙ্গার স্বাদ টক এবং মিষ্টি মিশ্রিত। কামরাঙ্গা ফল পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই ওষুধিগুণ সমৃদ্ধ ফল কামরাঙ্গা যেমন পূরণ করবে শরীরে পুষ্টি তেমনি প্রতিরোধ করবে নানান রোগ।
টক ও মিষ্টি সাদ যুক্ত দুই ধরনের কামরাঙ্গা সাধারণত পাওয়া যায়। এতে ভিটামিন এ অল্প পরিমাণে থাকলেও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে থাকে। এতে ভিটামিন সি এর পরিমাণ আম আনারস ও আঙ্গুরের চেয়ে বেশি। , কামরাঙ্গায় আয়রনের পরিমাণ পাকা কাঁঠাল, পাকা পেঁপে, লিচু, কমলা লেবু ও ডাবের পানির থেকেও বেশি। আবার কামরাঙ্গা দিয়ে জ্যাম জেলি চাটনি ইত্যাদি তৈরি করা যায়।
শেষ বক্তব্য।দেশীয় ১৫টি ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আমাদের বাজারে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় ফল পাওয়া যায়। এই ফলগুলো অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। দেশীয় পনেরো টি ফল সম্পর্কে আপনি যদি জানতে পারেন তাহলে আপনার অনেক উপকারে আসবে। বাজারে গেলে কখন দেশীয় কোন ফল পাওয়া যাবে এবং এসব ফলগুলোতে আপনি এবং আপনার পরিবারের মানুষের শরীরের জন্য কোন ধরনের উপকারিতা পাবেন সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আপনার ও আপনার পরিবারের সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে দেশীয় ফল গুলো সম্পর্কে আপনার ভালোভাবে জানা উচিত।
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়েছেন এবং দেশীয় ১৫ টি ফল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। দেশীয় ১৫ টি ফল সম্পর্কে যেসব তথ্য আপনি পেয়েছেন সে সব নিশ্চয়ই আপনার অনেক কাজে আসবে। তাই আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা যদি আপনার উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করুন। আর কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামতটি জানাতে ভুলবেন না। এরকম আরো বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি রেগুলার ভিজিট করুন। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। ধন্যবাদ
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url