OrdinaryITPostAd

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম - ইসলামে ভ্যালেন্টাইন ডে

মৃত ব্যাক্তিকে বরই পাতা দিয়ে গোসল করানোর নিয়ম ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম প্রতিটি মুহূর্তে বৈধ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবশ্যই জায়েজ। ইসলামে ভ্যালেন্টাইন ডে অবৈধ সম্পর্ক হলে অশ্লীল কর্মকাণ্ড বলে বিবেচিত যা যুব সমাজকে চাকচিক্য দেখিয়ে বিপদগামী করার জন্যে অগ্রসর করছে।
এক ধরনের উন্মাদনা প্রেমিক যুগলের চোখে মুখে ফুটে উঠে যা এক নতুন সংস্কৃতি সৃষ্টি করছে। এটি মুসলমানদের কোন দিবস নয় কিন্তু ভালোবাসা দিবস নামে সারা বিশ্বে পালিত হয়। 

পেইজ সূচিপত্র

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম

ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাসে ইসলাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আল্লাহ পাক অসীম দয়ালু এবং রাহমানুর রাহিম। তাই যেহেতু তিনি রাহমানুর রাহিম তাই উনার রহমতে একটি শব্দ রহিম অর্থাৎ বন্ধন যা বিধর্মীরা পালন করে থাকে। এক অশেষ নেয়ামত যা মুসলমানরা স্বামী স্ত্রী অর্থাৎ প্রত্যেক জোড়ায় এই নিয়ামত ভোগ করে থাকে। ইসলাম প্রতিটি মুহূর্তে নিয়মিত স্বামী স্ত্রীর প্রতি অগাধ ভালোবাসার নির্দেশ দিয়েছে। হাদিস শরীফে স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে।
তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম। অপরদিকে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর ভালবাসাকে সম্মান প্রদর্শন করে বলা হয়েছে। যদি আল্লাহ পাক পৃথিবীতে কাউকে দ্বিতীয়বার সেজদা করার নির্দেশ দিতেন তাহলে স্বামীদেরকে সিজদা করতে বলতেন। হাদিস শরীফে স্ত্রীদের সাথে হাসিমুখে কথা বলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু ভালবাসা দিবসের দিনে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকালে, হাসিমুখে কথা বললে এবং ক্ষমাপ্রদর্শন করে সম্মান করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি বরকত এবং রহমত লাভ করা যায়।

ভ্যালেন্টাইন ডে প্রতিটি মুসলমান স্বামী স্ত্রীর জন্যে এক বরকতময় দিন। যদি তাদের মধ্যে ইসলামী আদর্শ মতে মহব্বত বিদ্যমান থাকে, তাহলে তারা সেই নিয়ামত ভোগ করতে পারবে। বিধর্মীদের আদর্শ অর্থাৎ পশ্চিমা বিশ্বে যারা রয়েছেন তারা কল্পনাই করতে পারে না যে ইসলাম ভালোবাসার প্রতি কতটা গুরুত্ব দিয়েছে। বেশিরভাগ বিধর্মীদের মাঝে এটি লক্ষ্য করা যায় যে, তারা খুব বেশি ঝগড়া, ফ্যাসাদ এবং ভালবাসাহীনতায় ভুগতে থাকে। দুনিয়ার কোন স্বার্থ না থাকলে ভালোবাসা পরিপূর্ণ হয় না।

ভ্যালেন্টাইন ডে সম্পর্কে ইসলাম কি বলে

ভ্যালেন্টাইন ডে সম্পর্কে ইসলাম সৃষ্টি জগতের প্রতি ভালোবাসার নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও ভালবাসতে হলে কোন দিনের প্রয়োজন হয় না। নির্দিষ্ট কোন সময় বা দিনকে কেন্দ্র না করে ভালোবাসা সময়ের গতির সাথে বহমান হয়ে চলতে থাকে। যদি কেউ দুনিয়ার লোভে কাউকে ভালোবাসার চেষ্টা করে তাহলে তাকে করুণ লানতের শিকার হতে হয়। ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম এর গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো চলুন জেনে নেওয়া যাক।

  • সত্যিকারের ভালোবাসা সব সময় স্বার্থহীন থাকে। যদি ভ্যালেন্টাইন ডে এর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আপনি কাউকে ভালোবাসেন তাহলে আপনাকে দুনিয়াতে সব ধরনের চাওয়া পাওয়া থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে।
  • কারণ সত্যিকারের ভালোবাসা একটি মানবকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্যে করে যা দ্বারা ইসলামিক ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
  • হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে এসেছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, যদি কেউ আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যে পরস্পরকে একসাথে গভীরভাবে ভালোবাসে। 
  • তাহলে আল্লাহর সন্তুষ্টির কামনায় তারা একে অপরের সাথে দেখা করে। অথবা ভালোবাসার জন্যেই তারা নিজের ধন সম্পদ ব্যয় করে দেয়।
  • এমনকি আল্লাহকে পাওয়ার আশায় তারা একে অপরের সাথে মিলিত হয় তাদের ভালোবাসা রাসূলের জন্যে ওয়াজিব হয়ে যায়।
  • হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে এসেছে যে রাসূল এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোকের কথা তুলে ধরেছেন যারা নবী নয় আবার শহীদও নয়।
  • কিয়ামতের ময়দানে তাদের মর্যাদা দেখে নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষা করতে থাকবেন।
  • কোন একজন রাসূলকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তারা কারা? তিনি উত্তরে বলেছিলেন যে এই সকল লোক শুধুমাত্র আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করে।
  • তাদের মধ্যে কোন ধরনের রক্তের সম্পর্কও থাকে না এমনকি বংশের সম্পর্কেও থাকে না।
  • এই সকল লোকটিকে দেখতে এতটাই জ্যোতির্ময় মনে হবে যে তারা নূরের মিম্বারের উপর অবস্থান করতে থাকবে।
  • কিয়ামতের এক ভয়াবহ সময়ে মানুষ যখন অনেক বেশি ভীত থাকবে তখন তাদের মধ্যে কোন ধরনের ভয় থাকবে না।
  • মানুষ যখন অনেক বেশি দুঃখে পতিত হবে তাদের মধ্যে কোন ধরনের দুঃখের অনুভূতিও থাকবে না।
  • ভালোবাসা দিবসের নাম করে ভ্যালেন্টাইন ডে ইসলাম বহির্ভূত হলেও তা বৈধ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবশ্যই জায়েজ।
  • কেউ কেউ আবার ইসলামে ভ্যালেন্টাইন ডে কে নির্লজ্জ দিবস হিসেবে বলে থাকেন। তাদের ক্ষেত্রে ইসলামে এই ধরনের দিন পালন করা নিষেধ।
  • বিবাহের পূর্বে একজন তরুণ তরুণী পরস্পরের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে কথাবার্তা এবং প্রেম ভালোবাসার মাধ্যমে দিন অতিবাহিত করা ইসলাম ধর্মে সম্পূর্ণরূপে হারাম করা হয়েছে।
  • কোরআন হাদিসের দৃষ্টিতে ভালোবাসা বিয়ের পর থেকেই পবিত্রতা হিসেবে ধরা হয়। বিয়ের পরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যেই ধরনের ভালোবাসার সৃষ্টি হয় তাতে অনেক সওয়াব এবং কল্যাণ নিহিত থাকে।

ভ্যালেন্টাইন ডে কি ইসলামে অশ্লীলতার আগ্ৰাসন দিবস

ভ্যালেন্টাইন ডে কে ইসলামে অশ্লীলতার একমাত্র দিন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি অশ্লীলতার আগ্রাসন দিবস হিসেবেও এটিকে মানা হয়। কারণ ভ্যালেন্টাইন ডে এর নাম করে অনেকে অশ্লীলতা এবং নোংরামিতে ভরপুর থাকে। এই দিনটি যারা ভালোবাসা দিবস উদযাপনের নামে বেহায়াপনা কাজ করে ঘুরে বেড়ায় তাদেরকে ইসলাম সমর্থন করে না। শরীয়ত বিরোধী কোন ধরনের কাজ ইসলামে অশ্লীল হিসেবে গণ্য হয় যদিও সেটি বিনোদন হিসেবে উদযাপনের জন্যে বলা হয়।

এই অপসংস্কৃতি থেকে বাঁচার জন্যে ইসলাম ভালোবাসা দিবস উদযাপনের পক্ষে নয়। ভিন্ন কোন ধর্মীয় দিবস মুসলিমদের উদযাপন করার কোন সুযোগ থাকে না। যদিও তারা এটিকে একটি নাম দিয়ে উদযাপন করে থাকে। অতীতের ইতিহাস থেকে যদি মুসলিমরা নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত এই বিষয়গুলোকে অবমূল্যায়ন করে তাহলে সে কখনোই সঠিকভাবে ধর্ম পালন করতে পারে না। ভাষা কেন্দ্রিক প্রতিটি মানুষেরই একটি চেতনা রয়েছে যারা রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভালবাসাকে ফুটিয়ে তুলে। 
এটি তরুণ তরুণীদের মধ্যে অপবিত্রতা এবং অশ্লীলতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। যদিও এটি সঠিক ভালোবাসা নয়। কারণ এখনকার সময়ে অধিকাংশ প্রেমিক যুগলদের সম্পর্ক টিকে থাকে না। খুব সহজেই ভাঙ্গা কোন লাঠির মত ভেঙে যায়। ভালোবাসার গভীরত্ব না বাড়িয়ে এক অশ্লীলতার আগ্রাসন চিত্র সমাজে ফুটে উঠে। যদিও ইসলাম বলে থাকে নোংরা এবং জঘন্য ইতিহাসকে স্মৃতিচারণ করে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পালিত হয়ে থাকে। কিন্তু তা ঠিক নয় ইতিহাসটি একজন সঠিক প্রেমিকের জীবনে ঘটেছিল এবং যুগ যুগ ধরে প্রেমিক যুগলরা স্মরণ করে আসছে।

কিন্তু এখন অশ্লীলতা এবং বেহায়াপনা দুটি একসাথে মিশ্রিত হয়ে ভিন্ন রকম এক পরিবেশের সৃষ্টি করে। ইসলাম বলে থাকে এই দিবসটি পালনের মাধ্যমে অধিকাংশ লোকেরই ঈমানের ঘাটতি হয়ে থাকে। যার ফলে তারা ভালবাসার পরিবর্তে নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনছে যা ভবিষ্যৎ মানব প্রজন্মের জন্যে এক অভিশাপ থেকে আনে। এক সময় মানুষ ভ্যালেন্টাইন ডে সম্পর্কে খুব বেশি জানত না ভালোবাসার খুবই অভাব ছিল।

কিন্তু এখন সেই অতীত ইতিহাসকে স্মরণ করে এই দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করে থাকে। কিন্তু অপবিত্রতা এবং নোংরামি এমন ভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে যে ভালোবাসা নামক বস্তুটি এখন হারিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা মানুষের হৃদয় থেকে ভালোবাসা উঠিয়ে নিচ্ছেন। তাই সত্যিকার ভাবে ইসলাম বলছে ভালোবাসা দিবসকে চিনতে হলে রাস্তায় নামতে হবে না। ঘরে বসেই পবিত্র সম্পর্কের মাধ্যমে প্রেমিক যুগল নিজেদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে।

ইসলামে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করাটা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ

ইসলামে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন এর জন্যে কতটুকু নির্দেশ রয়েছে তা আপনাকে খুব ভালোভাবে চিন্তা করতে হবে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করার উদ্দেশ্যে অনেকেই চরিত্রহীন লম্পট এর মত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। যার বিরুদ্ধে ইসলাম কখনোই সমর্থন দেয় না। ইসলাম বলছে যে এটি স্বল্প সময়ের জন্যে খুব বেশি আনন্দ হলেও আল্লাহর পক্ষ থেকে তার উপর কোন ধরনের রহমত বর্ষিত হয় না। ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম কতটুকু গুরুত্ব সহকারে আপনাকে নিতে হবে সেই বিষয়ে চলুন বিস্তারিত একটু দেখে নেওয়া যাক।

  • ইসলাম বলছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন যদিও সকলে ভালোবাসার উদ্দেশ্যে পালন করে থাকে কিন্তু একটি পাশ্চাত্য একটি সংস্কৃতি যা মোটেও উচিত নয়।
  • এর মাধ্যমে অশ্লীলতা নোংরামি খুব সহজেই ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে অশ্লীল বিনোদন ইসলামকে মহাপাপে জর্জরিত করে।
  • কোরআন হাদিসের আলোকে তরুণ তরুণেরা যখন একে অপরের সাথে মেলামেশায় ব্যস্ত থাকে, তখন বেহায়াপনা যত ধরনের কর্মকাণ্ড হয় তা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না।
  • ভ্যালেন্টাইন ডে এর নাম করে ভালোবাসা দিবসে ইসলাম বহির্ভূত যত ধরনের নির্লজ্জ কর্মকাণ্ড গঠিত হয় তা মোটেও ঠিক নয়।
  • ইসলাম সব সময় পবিত্র ভালবাসার দিকে দৃষ্টি দেয়। কারণ বিবাহের পরে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যেই ভালোবাসা সৃষ্টি হয় তার মধ্যে যথেষ্ট কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
  • ইসলাম সব সময় স্বার্থহীন ভালোবাসাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সহকারে দেখে থাকে।
  • সৃষ্টির জগতে ভালোবাসার প্রতি টান সৃষ্টি হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু যেহেতু ভালোবাসা মহান আল্লাহ পাকের একটি নিয়ামত।
  • খোদাতায়ালা সবার মধ্যে এই ভালোবাসার গভীরত্বের স্রোত দিয়ে দিয়েছেন। যিনি জ্ঞানী এবং বুদ্ধিমতী তিনি সত্যিকার ভালবাসার দিকে ধাবিত হবেন।
  • ভ্যালেন্টাইন ডে যদি আপনি পালন করে থাকেন তাহলে শুধুমাত্র আল্লাহকে পাওয়ার জন্যে আপনি স্মরণ করতে পারেন।
  • কারণ পূর্বের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া ভ্যালেন্টাইন এর ইতিহাস বলছে সেই মুহূর্তে এটি সত্যিকার প্রেম থেকেই হয়েছিল।

ইসলামের দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন ডে এর পর্যালোচনা

ইসলামের দৃষ্টিতে ভালেন্টাইন ডে খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে আপনি বুঝতে পারবেন যে এটি কি রূপে ইসলাম প্রকাশ করেছে। যদিও আজকে ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম কে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এক কথায় বলা যায় তরুণ প্রেমিকদের গোপন এক প্রেমের মন্ত্র ভ্যালেন্টাইন নামের এক ব্যক্তি শিক্ষা দিতেন। যার ফলে সম্রাট ক্লডিয়াস সেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর শিরচ্ছেদ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এরপর থেকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে নামকরণ করা হয়। 

ভালোবাসা নামক এক অনুভূতি প্রতিটি সৃষ্টির মাখলুকাতের মাঝেই রয়েছে। যদি তারা পরস্পরের মধ্যে প্রীতি এবং ভালোবাসা স্থাপন করে তাহলে এটি মহান আল্লাহ পাকের একটি বিশেষ দান। শুধুমাত্র ভালোবাসা আছে বলেই বড় জঙ্গলের হিংস্র প্রাণীগুলো তাদের মধ্যে মিলেমিশে থাকার ভরসা পায়। তাই এটি সৃষ্টিকর্তার এক বিশেষ নিয়ামত। খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করে জানা যায় তরুণ তরুণীরা বেশ উৎসব মুখর ভাবে এখন যদিও এটিকে পালন করে থাকে পূর্বের ইতিহাস খুবই দুঃখজনক ছিল।

ইসলামের দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন ডে কি

ইসলামের দৃষ্টিতে ভ্যালেন্টাইন ডে এর সংজ্ঞা যদি সংক্ষিপ্ত রূপে প্রকাশ করা হয়, তাহলে পবিত্র সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে যেখানে বিবাহের মাধ্যমে ভ্যালেন্টাইন ডে স্মরণ করা যায়। কিন্তু এখনকার সময়ে ভ্যালেন্টাইন ডে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সংস্পর্শে ধাবিত হচ্ছে। ইসলাম বলছে এটি বেপর্দা এবং বেহায়াপনা নির্লজ্জ একটি উৎসব যা শয়তানের ধোঁকা থেকে তরুণ তরুণীরা পালন করে থাকে যা কোরআন এবং সুন্নাহ শরীফ মোতাবেক কবিরা গুনাহ হিসেবে নেওয়া হয়।
হাদিস শরীফে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তায়ালা থেকে এসেছে যে, আল্লাহ পাক উনার হাবিবের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে ব্যক্তি সেই সম্প্রদায়ের সাথে মিল রেখে দলভুক্ত হবে তার হাশর নাশর সেই দলের সাথেই হবে। সেই অনুযায়ী ইসলামের ভাষায় যারা ভালোবাসা দিবস অর্থাৎ ভ্যালেন্টাইন ডে পালন করবে তাদের হাশর, নাশর, ইহুদী, নাছারা বা বিধর্মীদের সাথেই হবে। শুধু তাই নয় সংক্ষিপ্তভাবে ইসলাম বলছে যারা ভ্যালেন্টাইন পালন করে তারা কুফরী করে থাকে। অর্থাৎ তারা মুসলমান হওয়ার নামে গভীরে ষড়যন্ত্র করে থাকে।

ইসলামের আলোকে এটি কিবেহায়া দিবস

ইসলামের আলোকে ভ্যালেন্টাইন ডে বেহায়া দিবস হিসেবে পরিচিত। কারণ ভ্যালেন্টাইন ডে তে যেই ধরনের ইসলাম বহির্ভূত কর্মকাণ্ড হয় তা ইসলামে সরাসরি শরীয়ত মোতাবেক নিষিদ্ধ। তরুণ তরুণীদের পরস্পরের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা, কথাবার্তা, মেলামেশা এবং প্রেম ভালোবাসা থেকে শুরু করে সবকিছু ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক হারাম যা কোরআন হাদিসের আলোকে একমাত্র বিবাহের পরেই নির্দেশ করা হয়েছে।

কিন্তু অনেকেই এর পরিবর্তে অশ্লীলতা এবং নোংরামিতে আছে যা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না। কাজেই যদি অপসংস্কৃতি থেকে বেঁচে থাকতে চান তাহলে ভ্যালেন্টাইন ডে থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখুন যা একজন মুসলিম হিসেবে আপনার দায়িত্ব এবং কর্তব্য হতে পারে। বিশেষ করে যেই সকল যুবক তরুণ তরুণী রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য। ইসলামের আলোকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা যেটি শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যেই ত্যাগ করা হয়।

আল্লাহর মহব্বতে তারা একে অপরকে মহব্বত করে সেই সকল লোকের মুখমন্ডল এতটাই জ্যোতির্ময় হবে যে, তারা নূরের মিম্বরের উপর অবস্থান করবে। তাই ইসলামের আলোকে যেহেতু এটিকে বেহায়া দিবস হিসেবে দেখা হয়েছে। যদি ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম এর ভালোবাসা সৃষ্টি কর্তার জন্যে হয় তাহলে অবশ্যই এটি বেহায়াপনায় অন্তর্ভুক্ত হবে না।

ভ্যালেন্টাইন ডে কিভাবে এলো

ভ্যালেন্টাইন ডে এর আবির্ভাব স্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। এটি খুব ভালোভাবে পর্যালোচনা করলে আপনি বুঝতে পারবেন যে এর পূর্ব ইতিহাসে কি রয়েছে। পূর্বে প্রাচীন রোমে ঠিক ১৪ ফেব্রুয়ারি রোমান রানী জুনোকে প্রেমের দেবী বলে লোকেরা বিশ্বাস করতেন। তাই ১৪ ফেব্রুয়ারি এই দিনটিকে তখনকার সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ সহকারে পালন করা হতো। কিন্তু সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে এক ধর্মযাজক এবং পুরোহিত ছিল যে আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী হওয়ায় খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতেন।
ভ্যালেন্টাইন রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করার অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল যেহেতু ১৪ ফেব্রুয়ারি তার মাথা কেটে ফেলা হয়েছিল। তাই ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম কে এই আত্মত্যাগের জন্যে যুগ যুগ ধরে প্রেমিক যুগল স্মরণ করে আসছে। ভালোবাসার বহমান ধারায় সবসময় স্বার্থহীন ভাবে যুগ যুগ ধরে সৃষ্টি প্রদত্ত সেই সম্মান প্রেমিকগণ পেয়ে থাকেন তারই এক উদাহরণ হচ্ছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন।

ভ্যালেন্টাইন ডে এর বিস্ময়কর কিছু তথ্য

ভালেন্টাইন ডে এর বিস্ময়কর কিছু তথ্য শুনলে আপনি হয়তো খুব বেশি অবাক হবেন। যদিও এটি ইসলামে কোনভাবেই শরীয়তসম্মত হয় না। বরং এটিকে অশ্লীলতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ভালোবাসার জন্যে কোন দিবস রজনীর দরকার হয় না। কিন্তু দরকার হয় স্বার্থহীন ভাবে সঠিক মন কাউকে দেওয়ার যদি আপনি সৃষ্টিকর্তাকে মন থেকে সত্যিকারভাবে ভালবাসেন, তাহলে আল্লাহর সন্তুষ্টি খুব সহজেই লাভ করতে পারবেন।

বিস্ময়কর কিছু তথ্যের মধ্যে একটি হচ্ছে যা ইতিহাসে আজও স্মরণীয় করে রাখতে ভালেন্টাইন ডে পালন করা হয়। প্রেমিক যুগলগন যদি আল্লাহকে পাওয়ার জন্যে একে অপরকে ভালোবেসে থাকে তাহলে ইসলামিক ভাবে বৈধ হওয়া জরুরি। বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পরে একে অপরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাবার আশায় ভালবাসতে পারে।

শেষের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, ভ্যালেন্টাইন ডে অর্থাৎ ভালোবাসা দিবস একজন প্রেমিক প্রেমিকার জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ভ্যালেন্টাইন ডে এর ইতিহাস ইসলাম তা কখনোই ভালো চোখে দেখে না। বরং এটিকে অশ্লীলতা এবং নোংরামি মনে করে থাকে। শুধু তাই নয় বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উদযাপন করে বেহায়াপনা কর্মকাণ্ড হিসেবেও অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। ভালোবাসা দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনার মূল্যবান মতামত দিতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ। 25275

আমাদের লেখা যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন । কোন ভুল ত্রুটি হলে সেটাও কমন বক্সে জানাবেন । এরকম আরো সুন্দর সুন্দর লেখা পেতে রেগুলার আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন এবং আমাদের পাশে থাকুন । আপনাদের উৎসাহ আমাদের আরো সুন্দর সুন্দর লেখার অনুপ্রেরণা যোগাবে ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪