OrdinaryITPostAd

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ - নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজনৈতিক বিপর্যয়

নবাব সিরাজউদ্দৌলার স্ত্রীর নাম কিনবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা। পলাশীর যুদ্ধ বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের রাজনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনে। এখানে নবাবের অনভিজ্ঞতা প্রকাশ পায় যা ঘাতকদের জন্যে সহায়ক ছিল।
নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-পরাজয়ের-কারণ
মীরজাফর নবাবের একজন সেনাপতি হওয়া সত্ত্বেও নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও কূটনীতিতে জড়িয়ে ছিলেন। যার ফলে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অচিরেই ডুবে যায়।

পেইজ সূচিপত্র

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ খুব সহজেই আপনি ইতিহাস ঘাটলে পেয়ে যাবেন। মূল ষড়যন্ত্র করেছিল জগৎ শেঠ, মীরজাফর, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ, রায়দুর্লভ, ঘসেটি বেগম সহ তার নিকটাত্মীয় অনেকেই তারাও এই পরাজয়ের পিছনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। নবাব সিরাজউদ্দৌলা তাদের ষড়যন্ত্র বুঝতে না পারাটা পরাজয়ের পেছনে অনেক বড় একটি কারণ। বিশেষ করে যুদ্ধের সময় নবাব সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে যেই সকল সৈন্য ছিল।
তার অধিকাংশ সৈন্য যুদ্ধের সময় অংশগ্রহণ না করার ফলে খুব সহজেই তাদের পরাজয় নেমে আসে। স্বাভাবিকভাবেই তার সৈন্যসংখ্যা বেশি থাকলেও যুদ্ধ অংশগ্রহণ করার জন্য অধিকাংশ লোকই বিপক্ষে ছিল। গোপনে ষড়যন্ত্র করার কারণে সরল মনে নবাব ইংরেজদের হাতে খুব সহজেই পরাজিত হন। এছাড়াও যুদ্ধের সময় যুদ্ধের অধিকাংশ উপকরণ নষ্ট হয়ে যায় এবং যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে নানা ধরনের কুপরামর্শ দিয়ে যুদ্ধ বন্ধ করা হয়। যার ফলে নবাবের পরাজয় বরণ করতে হয়।

অনেকটাই নবাব এই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে পূর্ব থেকে বুঝতে পারছিলেন। যদিও তিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে অনেকভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পরিশেষে মীরজাফরের কথাই বহাল থাকে। মীরজাফর এমন একজন সেনাপতি ছিল যার চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ইংরেজরা জয়লাভ করে। মীরজাফর নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে যেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেটি ভঙ্গ করার ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়কে মেনে নিতে হয়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় কি রাজনৈতিক ছিল

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের রাজনৈতিক বিষয় ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু নবাব সিরাজউদ্দৌলা মীরজাফরকে প্রধান সেনাপতি করেছিলেন তার উপর আস্থা এবং বিশ্বাস দুটিই ছিল প্রবল। কিন্তু পরবর্তীতে যুদ্ধের ময়দানে যখন সেটি বিশ্বাসঘাতকতায় রূপ নিল তখন ধীরে ধীরে এক রাজনৈতিক অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা প্রকাশিত হলো। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ এর পেছনে রাজনৈতিক যেই সকল বিষয়গুলো রয়েছে চলুন সেইগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত দেখে নেওয়া যাক।

  • নবাবের সাথে উপর দিয়ে হাত মিলিয়ে ভেতরে গভীর ষড়যন্ত্র করতে থাকে এবং শান্তিপূর্ণ কোন আলোচনা না থাকায় পরবর্তীতে নবাবের পরাজয় অতি সন্নিকটে চলে আসে।
  • নবাবের বিশেষ চিঠি যখন কলকাতায় যায় তখন ইংরেজরা তাকে বেশ অপমানিত করে।
  • কারণ কলকাতার ইংরেজ গভর্নর তখন নবাবের প্রতিনিধি নারায়ণ সিংহকে বিতাড়িত পর্যন্ত করে দেয়।
  • পরবর্তীতে নবাব কলকাতা পর্যবেক্ষণ করে কাসিমবাজার কুঠি অবরোধের নির্দেশ দেন এবং কুঠির প্রধান যদিও আত্মসমর্পণ করেন।
  • কিন্তু কলকাতার ইংরেজ কোনভাবেই তা মেনে নিতে পারছিলেন না। ফলে পরবর্তীতে নবাব কলকাতা অভিযানের মাধ্যমে দখল করে নেয়।
  • পরবর্তীতে তারা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগে এবং নবাবের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে থাকে।
  • নবাব সিরাজউদ্দৌলা মুর্শিদাবাদে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের উপর একটু অসন্তুষ্ট হলেও নবাবকে তারা উৎখাত করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়।
  • ষড়যন্ত্র করতে থাকে যারই ফল হিসেবে পরবর্তীতে পলাশীর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। আর সেখানে মীরজাফর পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে।
  • নবাবকে পরাজিত করে অনেক পূর্ব থেকেই ষড়যন্ত্র চলতে থাকে কিভাবে নবাবকে সরিয়ে দেওয়া যায়।
  • পলাশীর প্রান্তরে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে চরম আঘাত নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়।
  • শুধু তাই নয় পলাশীর প্রান্তরে যুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার অনেক পূর্ব থেকে শুরু করে।
  • দীর্ঘ সময় পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্রের জাল বুনে অবশেষে রাজনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করা হয়।

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে কিভাবে পরাজিত করেছিল

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় কোনোভাবেই বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে মেনে নেওয়ার মতো ছিল না। কিন্তু তারপরেও নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পলাশীর প্রান্তরে পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল। ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা, ইংরেজদের হস্তক্ষেপ এবং গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এই পরাজয়ের উৎপত্তি হয়। জগত শেঠ, মহারাজা স্বরূপ চাঁদ, ঘসেটি বেগম, মাহতাব চাঁদ সহ আরও অনেকেই এই ষড়যন্ত্রের কারিগর ছিল।
নবাব-সিরাজউদ্দৌলাকে-হত্যার-পর-কি-ঘটেছিল
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে পঁয়ষট্টি হাজার সৈন্য থাকা সত্ত্বেও পয়তাল্লিশ হাজার সৈন্য নিরব ভূমিকা পালন করে। যারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পক্ষে যুদ্ধ করেনি। যার ফলে তার দুই তৃতীয়াংশ সৈন্য নিরব ভূমিকা পালন করায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজনৈতিক বিপর্যয় এর কারণে ইংরেজদের কাছে দুর্বল হয়ে পড়েন। শুধু তাই নয় যুদ্ধের সময় অনেক বেশি বৃষ্টি হয়। আর সেই বৃষ্টিতে নবাব এবং তার সহযোগীদের কামানের গোলায় যেই সকল গান পাউডার ব্যবহার করা হতো।

সেইগুলো ব্যবহারের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। ইংরেজদের গান পাউডার খুব ভালোভাবেই সুরক্ষিত থাকে। যার ফলে নবাবের পরাজয় ধীরে ধীরে সন্নিকটে চলে আসে। এই অবস্থায় নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে দায়ী করে বসে থাকলে হবে না। পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় নবাবের বেশিরভাগ নিকট আত্মীয়দের কাছ থেকেই তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কারণ বাহিরের লোক কখনোই সাহস পাবে না যদি ভেতর থেকে কোন কুপরামর্শ বা ষড়যন্ত্র না করা হয়।

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হওয়ার পেছনের কাহিনী

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধে নবাবকে পরাজিত করে যেভাবে দখল করে নিয়েছিল পুরো দেশ তা প্রতিটি জাতির জন্য খুবই দুঃখজনক। ইংরেজরা কোটি কোটি টাকা লুট করে নিয়েছিল এবং তাদের মতো ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি করে দেশ দখলের মাধ্যমে শাসন করা শুরু করে। এর প্রথম যাত্রা শুরু হয় ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ এর মাধ্যমে যখন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয়ে যায়। তখন বাঙালি জাতির জন্য নেমে আসে এক দুর্যোগ।

১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশরা খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠে। যদিও যুদ্ধের প্রান্তরে তাদের সৈন্যসংখ্যা নবাবের তুলনায় খুবই কম ছিল। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কৌশল করে নবাবকে পরাজিত করে দেয়। এরই মধ্যে নেতৃত্ব দিয়েছিল রাজনৈতিকভাবে এবং কৌশলগতভাবে রবার্ট ক্লাইভ যা নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ। কারণ সে একজন সুচতুর বুদ্ধিমান এবং দক্ষ প্রশাসক ছিল। গোপনে মুর্শিদাবাদে মীরজাফরের সাথে এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয় সিরাজকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়ে মীরজাফরকে নবাব হিসেবে সিংহাসনে বসাবে। যদিও পরবর্তীতে মীরজাফর তার ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছিল। সিরাজউদ্দৌলার এর সাথে প্রতারণা এবং বিশ্বাসঘাতকতা করে মীরজাফর অনেক পূর্বেই মুর্শিদাবাদ পৌঁছে যান। সেখান থেকে ধন দৌলত লুট করে। বিপুল পরিমাণে ধন সম্পদ নিয়ে শিল্প বিপ্লব শুরু করে দেয়।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় কি শিক্ষা দেয়

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের শিক্ষা বাঙালির প্রতিটি ঘরে ঘরে ধারণ করা উচিত। কারণ এক ঘন্টার যুদ্ধে বাংলা, বিহার এবং উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হয়েছিলেন। পলাশীর সেই ২৩ জুনের ইতিহাস এক শ্মশানে পরিণত হয়েছিল। এই ইতিহাস বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস এবং ১৭৫৭ সালের ১২ জুন ইংরেজ সৈন্যরা একই সাথে মিলিত হয় এবং ঠিক ১৩ জুন যুদ্ধযাত্রা শুরু হয়।

মুর্শিদাবাদের হুগলি কাটোয়ার দুর্গ এর মধ্যে নবাবের সৈন্য থাকা সত্ত্বেও তারা ইংরেজদের কোন ধরনের প্রতিহত করল না। যার ফলে পরবর্তীতে নবাব বুঝে গিয়েছিলেন তার অধিকাংশ সেনাপতি এই ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত রয়েছেন। নবাব সিরাজউদ্দৌলা যখন সিংহাসনে বসেন তখন তার বয়স ছিল খুবই কম। তিনি একজন তরুণ নবাব ছিলেন যার ফলে ইংরেজদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।

আলীবর্দী খাঁনের বিশ্বস্ত অনুচর মীরজাফর এবং খালা ঘসেটি বেগম উভয়েই এই ষড়যন্ত্রের সাথে ইংরেজদের সঙ্গে নিয়ে সরাসরি নীল নকশা আঁকতে থাকে। যার ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশীর প্রান্তরে পরাজিত হন। এখান থেকে শিক্ষার বিষয় হলো দেশের ভেতরের শত্রুরা বাহিরে যেই সকল শত্রু হয়েছে তাদের থেকেও অনেক বেশি ষড়যন্ত্রকারী হয়। সকলকে দেশপ্রেম আমানত হিসেবে মনে করে ভালবাসতে হবে।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিপর্যয়ের কারণ

নবাব সিরাজউদ্দৌলার বিপর্যয়ের উৎপত্তি হয় অনেক পূর্ব থেকেই। আশেপাশের অনেকের মধ্যেই শত্রুতা মনোভাব এবং নবাবকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তা কাজ করতে থাকে। এই সমস্যা শুধু বাহির থেকেই নয় ভেতর থেকে তার নিকটাত্মীয় যারা ছিল তাদের মধ্যেও এই ধরনের প্রবণতা কাজ করতে থাকে। যার ফলে ধীরে ধীরে নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজনৈতিক বিপর্যয় এর সময় ঘনিয়ে আসতে থাকে। যদিও নবাব সিরাজউদ্দৌলা এই বিষয়ে অনেকটাই অসচেতন ছিলেন যেই সকল বিপর্যয় হয়েছিল তার পিছনে যেই সকল কারণগুলো ছিল চলুন সেইগুলো জেনে আসি।

  • নবাব সিরাজউদ্দৌলা সহজ সরল হওয়ায় তাকে কুপরামর্শ দিয়ে অনেকেই বিপদের দিকে ঠেলে দেন।
  • এর প্রমাণস্বরূপ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যখন গোলার আঘাতে মীরমদন নিহত হয় তখন মীরজাফরের কাছে তিনি পরামর্শ নিতে চান।
  • কিন্তু মীরজাফরের মনে ছিল বিশ্বাসঘাতকতার এক বিশাল ষড়যন্ত্র যা সিরাজউদ্দৌলা কোনভাবেই বুঝতে পারেন নি।
  • মীরজাফর নবাবকে সেই সময়ে যুদ্ধ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়ে বিপদকে আরও বাড়িয়ে দেন।
  • যুদ্ধ বন্ধ করার নির্দেশ হওয়ার ফলে নবাবের যত সৈন্য ছিল তারা সকলেই পিছু ফিরে যায় যা নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ।
  • মীরজাফরের এই বার্তা ইংরেজদের কাছে পৌঁছে যায় তখন নবাবের অপ্রস্তুত যেই বাহিনী রয়েছে তার উপরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে যায়।
  • যার ফলে ইংরেজরা খুব সহজেই এই যুদ্ধে জয় লাভ করতে পারে।
  • শুধু তাই নয় অতিরিক্ত লোভে পড়ে মীরজাফর নবাব সিরাজউদ্দৌলা এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে।
  • অনেক পূর্ব থেকেই নবাবকে দেওয়া তার প্রতিশ্রুতি সে ভঙ্গ করেছিল ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে নবাবের পতন ঘটায়।

পলাশীর যুদ্ধের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী কারা ছিল

পলাশীর যুদ্ধের প্রধান ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে যারা ছিল তাদের মধ্যে মীরজাফর, ঘসেটি বেগম, রায়দুর্লভ, ইয়ার লতিফ, আমির চন্দ্র, মাহাতাব চাঁদ, জগত শেঠ, মহারাজা স্বরূপচাঁদ অন্যতম। শুধু তাই নয় এই সকল ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও তার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে অভিজাত শ্রেণীর যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশই এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিল। কিন্তু এই ষড়যন্ত্র করেও যদি তারা পলাশীর প্রান্তরে নবাবকে হারিয়ে দিয়ে বিজয় লাভ করেছিল।

কিন্তু পরবর্তীতে নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজনৈতিক বিপর্যয় এর পিছনে যারা ছিল তাদের প্রত্যেকের জীবন ছিল খুবই করুণ। বাস্তবতায় নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ে এটি সত্য যে কেউ কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে তার প্রতিফল ভোগ করতে হয়। পলাশীর যুদ্ধের প্রান্তরে এই সকল ষড়যন্ত্রকারীরা যদি সহযোগিতা না করতো তাহলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা সেই দিন পলাশের প্রান্ত থেকে বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে মুর্শিদাবাদে ফিরে যেতেন কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি।

নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যার পর কি ঘটেছিল

নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করার পর ইতিহাসের এক ঘৃণ্যতম অধ্যায় ফুটে উঠেছিল। মুর্শিদাবাদে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে বন্দি করে রাখা হয়। শুধু তাই নয় এই অবস্থায় তাকে প্রাণদণ্ড দেয় মীরজাফরের ছেলে পুত্র মীরান। মীরজাফরের কোন ব্যক্তিগত মতামত ছিল না যেহেতু সে নিজে কোন ধরনের নিজস্ব মতামত দেয়নি। সেইক্ষেত্রে মীরান বাবাকে বিশ্রাম নেওয়ার কথা বলে সেই পুরোটা সামলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
নবাব-সিরাজউদ্দৌলার-প্রধান-সেনাপতি-কে-ছিলেন
তলোয়ার এবং ছুরি নিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করা হয়। তবে হত্যা করার পূর্বে তাকে অজু করে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। নিজেদের তাগিদে মীরন এবং তার সঙ্গীরা সিরাজের মাথায় পানি ঢেলে দেয়। ঠিকমতো তাকে অজু করতে না দিয়ে তাকে খাওয়ার জন্য কোন পানিও দেওয়া হয় নি। পানি দেওয়ার কথা বলার সাথে সাথে মোহাম্মদী বেগ ছুরি দিয়ে আঘাত করে।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ এর ফলে নবাবের উপরে হামলা চালায় কয়েক মিনিটের মধ্যেই নবাব মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন তার মরদেহ হাতির পিঠে জড়িয়ে গোটা শহর ঘোরানো হয়। মুর্শিদাবাদের অলিগলি সকল জায়গায় তার দেহ দেখানো হয়। রক্ত গড়িয়ে রাস্তায় ফোটা পড়তে থাকে। তারপরেও মীরনের নিষ্ঠুরতা শেষ হয় না। শুধু তাই নয় এর কিছুদিনের মধ্যেই আলী আলীবর্দী খাঁনের বংশের সকল নারীদেরকে হত্যা করা হয়েছিল।

নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি কে ছিলেন

নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনাপতি মীর জাফর ছিল এক বিশ্বাসঘাতক যার প্ররোচনায় এবং কুপরামর্শে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পলাশীর প্রান্তরে পরাজয় বরণ করেছিল। মীরজাফরকে বাংলার ইতিহাস এবং বাংলার মানুষ কখনো ক্ষমা করবে না। নবাব সিরাজউদ্দৌলার জন্য তার মনে কোনরূপ দয়া মায়া ছিল না। আলীবর্দী খাঁনের অনুচর হয়েও সে নবাব সিরাজউদ্দৌলার এত বড় ক্ষতি করতে পেরেছিল।
শুধু তাই নয় খালা ঘসেটি বেগমকে সাথে নিয়ে সে এক বড় ধরনের ষড়যন্ত্র এবং নীল নকশা আঁকতে থাকে। ইংরেজদের সাথে হাত মিলিয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পলাশীর প্রান্তরে ঠকিয়েছিল। যদিও নবাব পরবর্তীতে বুঝতে পেরেছিলেন সবার সেই গভীর ষড়যন্ত্র। কিন্তু ততক্ষণে আর কোন সময়ই হাতে ছিল না। নবাবের সৈন্যবাহিনী ছিল তার এক বিশাল হাতিয়ার। যখন এই সৈন্যদলই নিরব হয়ে গেল তখন নবাবের সমস্ত শক্তি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছিল। যার ফলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইংরেজদের কাছে খুব সহজেই পরাজিত হয়ে গিয়েছিলেন।

শেষের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, বাংলার ইতিহাসে শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা এক গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় নাম। যার নবাবের মধ্য দিয়ে বাংলার মানুষ খুঁজে পেয়েছিল এক নবপ্রাণ। এই পোস্ট থেকে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের কারণ প্রত্যক্ষভাবে নিশ্চয়ই ধারণা পেয়েছেন। বিস্তারিত ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের শেয়ার করতে পারেন। ইতিহাস সম্পর্কিত এই ধরনের আরও পোস্ট পেতে আপনার মূল্যবান মতামত দিতে পারেন। ধন্যবাদ। 25275

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪