সুরা মুলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মুলক বাংলা অনুবাদসহ জেনে নিন
Laila Ismat
২০ মার্চ, ২০২৪
মুসলিম হিসেবে প্রত্যেকেই সুরা মুলক প্রতিদিন পাঠ করা ও মুখস্থ করা জরুরী। আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি সুরা মুলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদসহ। আপনি যদি সূরা মুলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদসহ খুজে থাকেন তাহলে আজকে আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক ফলপ্রসূ হবে । আজকের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়লে আপনি সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদসহ পেয়ে যাবেন।
আমি আজকে আপনাদের জন্য সুরা মুলকের ফজিলত, সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদ সহ নিম্নে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছি । চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদ সহ যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে ।
সুরা মুলক এর ফজিলত । সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদসহ
মুসনাদে আহমাদে হযরত আবু হুরাইয়া(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, " কুরআনুল কারীমে ৩০ টি আয়াত বিশিষ্ট এমন একটি সূরা রয়েছে যা ওর পাঠকের জন্য সুপারিশ করতে থাকবে যে পর্যন্ত না তাকে ক্ষমা করে দেয়া হয় । ওটা হল মূলক সূরাটি। "হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, 'সুরা মুলক' কবর আযাব হতে রক্ষা করে । ইবনে আব্বাস (রাঃ) এক ব্যক্তিকে বললেন, আমি কি তোমাকে একটি হাদিস উপহার দিব যাতে তুমি সন্তুষ্ট হবে ? সে বলল , হ্যাঁ দিন , তিনি বললেন সূরা মুলক নিজে পড়ো , পরিবারের সকল ছেলেমেয়েকে এবং প্রতিবেশীকেও শিখাও । কেননা এটি শাস্তি হতে নাজাত দিবে এবং কিয়ামত দিবসে আল্লাহর সাথে ঝগড়া করে জাহান্নামের আগুন হতে নাজাত দিবে । আর এর পাঠকারী কবর আজাব হতে মুক্তি পাবে । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন , আমি ভালবাসি যে , আমার প্রত্যেক উম্মতের অন্তরে যেন এই সূরা মূলক থাকে ।
সুরা মুলক বাংলা উচ্চারণ । সূরা মূলক বাংলা অনুবাদসহ
সুরা মুলক বাংলা উচ্চারণ স্পষ্টভাবে নিচে তুলে ধরা হলো-
আয়াত নাম্বার ১ঃ মহামহিমান্বিত তিনি , সর্বময় কর্তৃত্ব যাহার করায়ত্ত; তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান ।
আয়াত নাম্বার ২ঃ যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন মৃত্যু ও জীবন , তোমাদেরকে পরীক্ষা করিবার জন্য-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম ? তিনি পরাক্রমশালী , ক্ষমাশীল ,
আয়াত নাম্বার ৩ঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সপ্তাকাশ । দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুত দেখিতে পাইবেনা; তুমি আবার তাকাইয়া দেখো , কোন ত্রুটি দেখিতে পাও কি ?
আয়াত নাম্বার ৪ঃ অতঃপর তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরাও , সেই দৃষ্টি ব্যর্থ ও ক্লান্ত হইয়া তোমার দিকে ফিরে আসিবে ।
আয়াত নাম্বার ৫ঃ আমি নিকটবর্তী আকাশকে সুশোভিত করিয়াছি প্রদীপমালা দ্বারা এবং উহাদেরকে করিয়াছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং উহাদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি ।
আয়াত নাম্বার ৬ঃ যাহারা তাহাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাহাদের জন্য রইয়াছে জাহান্নামের শাস্তি; উহা কত মন্দ প্রত্যাবর্তনস্থল ।
আয়াত নাম্বার ৭ঃ যখন উহারা তন্মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়েবে তখন উভারা জাহান্নামের বিকট শব্দ শুনিবে , আর উহা হইবে উদ্বেলিত ।
আয়াত নাম্বার ৮ঃরোষে জাহান্নাম যেন ফাটিয়া করিবে , যখনই উহাতে কোন দলকে নিক্ষেপ করা হইবে , উহাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞাসা করিবে ,' তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসে নাই ?'
আয়াত নাম্বার ৯ঃউহারা বলিবে ,' অবশ্যই আমাদের নিকট সতর্ককারী আসিয়াছিল , আমরা ওদেরকে মিথ্যাবাদী গণ্য করিয়াছিলাম এবং বলিয়াছিলাম ,' আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেন নাই , তোমরা তো মহা বিভ্রান্তিতে রহিয়াছো ।'
আয়াত নাম্বার ১০ঃএবং উহারা আরো বলিবে , ' যদি আমরা শুনিতাম অথবা বিবেক বুদ্ধি প্রয়োগ করিতাম , তাহা হইলে আমরা জাহান্নামবাসী হইতাম না ।'
আয়াত নাম্বার ১২ঃযাহারা দৃষ্টির অগোচরে তাহাদের প্রতিপালকে ভয় করে তাহাদের জন্য রহিয়াছে ক্ষমা ও মহাপুরুষ্কার ।
আয়াত নাম্বার ১৩ঃ তোমরা তোমাদের কথা গোপনেই বলো অথবা প্রকাশ্যে বলো , তিনি তো অন্তর্যামী ।
আয়াত নাম্বার ১৪ঃ যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন , তিনি কি জানেন না? তিনি সুক্ষদর্শী , সম্যক অবগত ।
আয়াত নাম্বার ১৫ঃতিনিই তো তোমাদের জন্য ভূমিকা সুগম করিয়া দিয়েছেন; অতএব তোমরা উহার দিক দিগন্তে বিচরণ কর এবং তাহার প্রদত্ত জীবন উপকরণ হইতে আহার্য গ্রহণ করো ; পুনরুত্থান তো তাহারি নিকট ।
আয়াত নাম্বার ১৬ঃ তোমরা কি ইহা হইতে নির্ভয় হইয়াছ যে , যিনি আকাশে রহিয়াছেন তিনি তোমাদেরকে সহ ভূমিকে ধসাইয়া দিবেন , অনন্তর উহা আকস্মিকভাবে থরথরো করিয়া কাপিতে থাকিবে ?
আয়াত নাম্বার ১৭ঃ অথবা তোমরা কি ইহা হইতে নির্ভয় হইয়াছো যে , আকাশে যে নিরহী আছেন তিনি তোমাদের উপর কঙ্করবর্ষী ঝঞ্ঝা প্রেরণ করিবেন ? তখন তোমরা জানাতে পারিবে কিরূপ ছিল আমার সতর্কবাণী!
আয়াত নাম্বার ১৮ঃইহাদের পূর্ববর্তীরাও অস্বীকার করিয়াছিল, ফলে কিরূপ হইয়াছিলো আমার শাস্তি!
আয়াত নাম্বার ১৯ঃ উহারা কি লক্ষ্য করে না উহাদের ঊর্ধ্বদেশে বিহঙ্গকুলের প্রতি, যাহারা পক্ষ বিস্তার করে ও সংকুচিত করে ? দয়াময় আল্লাহই উহাদেরকে স্থির রাখেন। তিনি সর্ব বিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা।
আয়াত নাম্বার ২০ঃ দয়াময় আল্লাহ ব্যতীত তোমাদের এমন কোন সৈন্যবাহিণী আছে কি , যাহারা তোমাদেরকে সাহায্য করিবে ? কাফিররা রহিয়াছে প্রবঞ্চনার মধ্যে।
আয়াত নাম্বার ২১ঃএমন কে আছে, যে তোমাদেরকে জীবনোপকরণ দান করিবে, তিনি যদি তাঁহার জীবনোপকরণ বন্ধ করিয়া দেন ? বস্তুত উহারা অবাধ্যতা ও সত্যবিমুখতায় অবিচল রহিয়াছে।
আয়াত নাম্বার ২২ঃ যে ব্যক্তি ঝুঁকিয়া মুখে ভর দিয়া চলে, সে-ইকি ঠিক পথে চলে, নাকি সেই ব্যক্তি যে ঋজু হইয়া সরল পথে চলে ?
আয়াত নাম্বার ২৩ঃ বল, 'তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছেন এবং তোমাদেরকে দিয়াছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। '
আয়াত নাম্বার ২৪ঃবল , ' তিনি পৃথিবীতে তোমাদের ছড়াইয়া দিয়েছেন এবং তাহারই নিকট তোমাদেরকে সমাবেত করা হইবে ।'
আয়াত নাম্বার ২৫ঃআর উহারা বলে ,' তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে বলো , এ প্রতিশ্রুতি কখন বাস্তবায়িত হইবে ?'
আয়াত নাম্বার ২৬ঃ বল , ' ইহার জ্ঞান কেবল আল্লাহরই নিকট আছে। আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র ।'
আয়াত নাম্বার ২৭ঃওরা যখন তাহা আসন্ন দেখিবে তখন কাফিরদের মুখমন্ডল ম্লান হইয়া পড়িবে এবং বলা হইবে , ' ইহা এতো তোমরা চাহিতেছিলে ।'
আয়াত নাম্বার ২৮ঃ বল, ' তোমরা ভাবিয়া দেখে আছো কি-যদি আল্লাহ তোমাকে আমার সঙ্গীদেরকে ধ্বংস করেন অথবা আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন , তবে কাফিরদেরকে কে রক্ষা করিবে মর্মান্তুদ শাস্তি হইতে ?'
আয়াত নাম্বার ২৯ঃ বলো , ', তিনিই দয়াময় , আমরা তাহাকে বিশ্বাস করি ও তাহারই উপর নির্ভর করি , শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে কে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রহিয়াছে ।'
আয়াত নাম্বার ৩০ঃবল , ' তোমরা ভাবিয়া দেখিয়াছো কি? যদি পানি ভূগর্ভে তোমাদের নাগালের বাহিরে চলিয়া যায় , তখন কে তোমাদেরকে আনিয়ে দিবে প্রবাহমান পানি ?'
লেখকের শেষ কথা । সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদসহ
সুরা মুলক অনেক ফজিলতপূর্ণ একটি সূরা । প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই সূরা মূলক পাঠ করবেন এবং মুখস্থ করে ফেলবেন । এজন্য আপনাদের সুবিধার্থে আজকের আর্টিকেলে সুরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সুরা মূলক বাংলা অনুবাদ সহ লিখেছি । যাতে আপনারা প্রতিনিয়ত সহজে পাঠ করতে পারেন এবং মুখস্ত করে ফেলতে পারেন । কাজে অবশ্যই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়বেন তাহলে সূরা মূলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূল বাংলা অনুবাদ সুন্দরভাবে পেয়ে যাবেন ।
সুরা মুলক বাংলা উচ্চারণ এবং সূরা মূলক বাংলা অনুবাদ সহ একদম নিখুঁতভাবে আপনার সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি । আপনি যদি আপনার কাঙ্ক্ষিত সুরাটি পেয়ে থাকেন এবং আমার এই লিখাটি আপনার যদি উপকারে আসে তবে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে এসে কমেন্ট করবেন । আর যদি আমার লিখার মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে সেটাও কমেন্ট বক্সে জানাবেন ।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url