স্বাধীনতা দিবসের রচনা - স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৪
আপনি কি স্বাধীনতা দিবসের রচনা করছেন ? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্যই এই আর্টিকেলে স্বাধীনতা দিবসের রচনা অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করা হয়েছে । প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়লেই আপনি স্বাধীনতা দিবসের একটি ৬০০ শব্দের ও একটি ১২০০ শব্দের দুইটি সুন্দর রচনা পেয়ে যাবেন । চলুন তাহলে রচনা ২টি সম্পকে জেনে নিন ।
নিচে আপনাদের জন্য প্রথমটি স্বাধীনতা দিবসের ৬০০ শব্দের রচনা এবং দ্বিতীয়টি স্বাধীনতা দিবসের ১২০০ শব্দের রচনা অনেক সুন্দর করে আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে খুব সহজে স্বাধীনতা দিবসের রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আর দেরি না করে চলুন তাহলে জেনে নিন আপনার কাঙ্ক্ষিত রচনা সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
- স্বাধীনতা দিবসের রচনা ৬০০শব্দের । স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৪
- স্বাধীনতা দিবসের রচনা ১২০০ শব্দের । স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৪
- শেষকথাঃ স্বাধীনতা দিবসের রচনা - স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৪
স্বাধীনতা দিবসের রচনা ৬০০শব্দের। স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৪
স্বাধীনতা দিবসের রচনা ১২০০ শব্দের । স্বাধীনতা দিবস রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৪
ভূমিকাঃ বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাস পরিক্রমায় 1971 সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস বর্বরতার মুখে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ শুরু হয় বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম । নয় মাসের দীর্ঘ এ সংগ্রামের সফল পরিণতি ও পূর্ণতা আসে সেই বছরের ডিসেম্বর । এদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ৯৩ হাজার সৈন্য নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করলে মুক্তিযুদ্ধের অবসান হয় । পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নেয় একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ , যার নাম বাংলাদেশ ।
স্বাধীনতা সংগ্রামে সাধারণ মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েঃ ১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চ রাতে বাংলার ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালি সৈন্য থেকে শুরু করে অগণিত নিরীহ অসহায় মানুষের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী । মরণাস্ত্র নিয়ে বাঙালি নিধনযোগে মেতে উঠেছিল তারা । বাংলার সবুজ শ্যামল মাটির সিক্ত হয়েছিল নিরস্ত্র বাঙালির লাল রক্তে , নদীর স্বচ্ছ জলধারায় মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল রক্তধারা । অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে ধ্বংস করিতে পরিণত করতে চেয়েছে তারা এ জনপদকে । এ হিংস্রতা , এ বর্বরতা এ অন্যায় আগ্রাসন মুখ বুজে সহ্য করেনি বাংলার মানুষ । যার যা ছিল তাই নিয়েই প্রতিরোধ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে এনেছিল কাঙ্খিত বিজয় ।
একুশের চেতনায় একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা নয় । ১৯৪৭ এর পর থেকে একের পর এক আন্দোলনের চূড়ান্ত ফসল হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় । । নির্বাচন ৬২ এর সামরিক আইন ও শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বিরোধী আন্দোলন ৬৬ এর ছয় দফার আন্দোলন ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানেরই চূড়ান্ত পরিণতি ৭১এর স্বাধীনতা সংগ্রাম । অমর একুশে ফেব্রুয়ারীর পথ এসেছিল ১৬ই ডিসেম্বর ।
মুক্তিবাহিনী গঠন ঃ ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ সাধারণ জনগণকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল মুক্তিবাহিনী । পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যেসব বাঙালি সৈন্য ছিল তারা এবং আধা সামরিক বাহিনীর বাঙালি সদস্যরাও তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তিবাহিনীর সাথে প্রকাশ করে ।
১৯৭১ সালের 25 শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায় নিরস্ত্র বাঙালির উপর । তারা নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় পিলখানা , রাজারবাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে । মধ্যরাতের পর হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । তার স্বাক্ষরিতা ঘোষণা বার্তাটি তৎকালীন ইপিআর এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের প্রেরণ করা হয় । এরপর চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর নামে প্রচারিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণা । সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে স্বতঃস্ফূর্ত মুক্তি সংগ্রাম ।
মুজিবনগর সরকার গঠনঃ ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ তলায় মুজিবনগর বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাকে রাষ্ট্রপতি করে গঠন করা হয় মুজিবনগর সরকার । ১৭ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে অস্থায়ী এ সরকার । এসময় গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধ চালানোর সুবিধার্থে জেনারেল এম এ জি ওসমানের তত্ত্বাবধানে সমগ্র দেশকে এগারোটি সেক্টরে বিভক্ত করা হয় বাঙ্গালী সংগ্রামের প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার সরকারের সমর্থন জ্ঞাপন করেন । অত্যাচারিত বাঙ্গালীদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত উন্মুক্ত করে দেয়া হয় । সীমান্তবর্তী ট্রেনিং ক্যাম্পগুলোতে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিংও দেয়া হতো । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন পাকিস্তানকে সমর্থন করে। অন্যদিকে ভারত সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তাদের মৃত দেশগুলো বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয় । ডিসেম্বরের শুরুতে পাকিস্তান ভারতের পশ্চিম অঞ্চলে বিমান হামলা চালালে ভারত সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ গঠিত হয় । অবশেষে বাংলাদেশের একাত্তরের 16ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রায় ৯৩ হাজার নিঃশর্ত সমর্পণ করে । এর মধ্য দিয়ে নয় মাসের রক্তক্ষয়ীর যুদ্ধের অবসান হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়ঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হয়েছে লাখো শহীদদের রক্ত অগণিত মানুষের চোখের পানি আর কোটি মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে । এক কোটি নিরাপরা মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছে ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে দুই লক্ষ বাঙ্গালী নারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে লাঞ্ছিত হয়েছে। বাংলাদেশের এক শ্রেনীর লোক আর রাজাকার আল বদর আলশামস বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানিদের এ নৃশংসতাকে সমর্থন ও মদদ দিয়েছে । শিকার হয়েছেন বাঙালির শিক্ষাবিদ সাহিত্যিক বিজ্ঞানী চিকিৎসক সাংবাদিক আইনজীবী শিল্পী ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদ । বাঙালিকে মেধাহীন করার জন্য এভাবেই পরিকল্পিত ও নীল নকশা অনুযায়ী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয় । ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাত থেকে শুরু করে ১৬ই ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞ চলে ।
উপসংহারঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাসের প্রতিটি ক্ষণ ছিল চরম আতঙ্ক আর অপরিসীম আশায় উদ্বেলিত। হয়েছিল প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস আর গভীর দেশপ্রেমের চেতনায়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল মিথ্যার বিরুদ্ধে শাশ্বত সত্যের এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামের মূর্ত চিত্র। বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশের অভ্যুদয় তাই এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ।
ট্রাসটেডএয়ার্ডের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url